চট্টগ্রামের পটিয়ায় ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে তিনটি পৃথক আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে দু’জন প্রবাসীর স্ত্রী ও একজন স্কুল দপ্তরি রয়েছেন। প্রতিটি ঘটনায় পারিবারিক বিরোধ, মানসিক অশান্তি ও সামাজিক চাপের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
স্বামীকে ভিডিও কলে রেখে খুশি আকতারের আত্মহত্যা:
শনিবার (৩০ আগস্ট) বিকেল ৪টার দিকে কুসুমপুরা ইউনিয়নের দক্ষিণ হরিণখাইন গ্রামে খুশি আকতার (২২) নামে এক প্রবাসীর স্ত্রী আত্মহত্যা করেন। তিনি ওই গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে গিয়াস উদ্দিন সাইফুর দ্বিতীয় স্ত্রী। সাইফু দীর্ঘদিন ধরে ওমানে কর্মরত।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার বিকেলে প্রবাসী স্বামী ভিডিও কল দেন, কিন্তু ব্যস্ততার কারণে কথা বলতে পারেননি। এতে অভিমান করে খুশি আকতার গলায় ফাঁস দেন। ঘটনাটি ভিডিও কলে প্রত্যক্ষ করে স্বামী দ্রুত ছোট ভাইয়ের স্ত্রীকে বিষয়টি জানান। পরিবারের সদস্যরা গিয়ে তাকে উদ্ধার করে পটিয়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
কুসুমপুরা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান শওকত আকবর বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, প্রথম স্ত্রীর সন্তানদের নিয়ে পারিবারিক কলহ ও মানসিক চাপে তিনি এই পথ বেছে নিয়েছেন।’
স্ত্রী-সন্তান কারাগারে, নেজাম উদ্দীনের আত্মহত্যা:
শুক্রবার (২৯ আগস্ট) রাত ১২টার দিকে হাবিলাসদ্বীপ ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডে মোহাম্মদ নেজাম উদ্দীন (৩০) নামে এক স্কুল দপ্তরী আত্মহত্যা করেন। তিনি চরকানাই গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে এবং হাবিলাসদ্বীপ উচ্চ বিদ্যালয়ের দপ্তরী ছিলেন।
স্থানীয় মোহাম্মদ আজাদ জানান, ‘বৃহস্পতিবার নেজামের স্ত্রী ও আড়াই বছরের পুত্র একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যান। এই ঘটনায় অপমান ও মানসিক অস্থিরতায় তিনি রাতের বেলায় নিজ ঘরে ফাঁস দেন। পরদিন সকালে স্থানীয়রা ঘরের দরজা খোলা দেখে ঢুকে তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান।’
সাদিয়া আক্তারের রহস্যজনক মৃত্যু:
শুক্রবার (২৯ আগস্ট) বিকেল ৩টার দিকে পটিয়া পৌরসভার দক্ষিণ গোবিন্দারখীল গ্রামে সাদিয়া আক্তার (২২) নামে আরেক প্রবাসীর স্ত্রী আত্মহত্যা করেন। তিনি প্রবাসী ফয়সাল তানভীর অমির স্ত্রী এবং এক কন্যা সন্তানের মা। বিয়ের দুই বছর ধরে তিনি শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শ্বাশুড়ির সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া হতো সাদিয়ার। শুক্রবার বিকেলে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন। পরে শশুর-শাশুড়ীর বিরুদ্ধ্ব নিহতের বিরুদ্ধে মামলা করলে পুলিশ শ্বশুর-শাশুড়িকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারগারে পাঠান।
পটিয়া থানার ওসি মো. নুরুজ্জামান বলেন, ‘তিনটি আত্মহত্যার ঘটনায় আমরা তদন্ত করছি। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এদিকে, একই উপজেলায় ২৪ ঘণ্টায় তিনজনের মৃত্যুতে স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পারিবারিক অশান্তি ও মানসিক চাপ এই ধরনের ঘটনার মূল কারণ হতে পারে।

 
                             
                                    
-(1)-20250830191559.webp)
 সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                    -20251031233315.webp) 
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                    -20251031164732.webp) 
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন