নেত্রকোনার খালিয়াজুরীর ধনু নদে স্পিডবোট ডুবির ঘটনায় ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) ঘটনাস্থল থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূর থেকে তিন জনের ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া শনিবার এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এর আগে গত শুক্রবার দুপুরে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের পাঁচহাট চরপাড়া এলাকায় ধনু নদে স্পিডবোট ডুবির ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- ঊষামণি খালিয়াজুরির আন্ধাইর গ্রামের মোফায়েল মিয়ার মেয়ে, একই গ্রামের স্বপন মিয়ার মেয়ে মোছা. লাইলা আক্তার (৭), নবাব মিয়ার মেয়ে মোছা. শিরিন আক্তার (১৮) ও সামছু মিয়ার মেয়ে সামিয়া আক্তার (১১)।
স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার আন্ধাইর গ্রামের নবাব মিয়ার ছেলে রানা মিয়ার বিয়ে উপলক্ষে কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলা থেকে একটি স্পিডবোট ভাড়া করে আনা হয়। স্পিডবোটে বরযাত্রীদের ইটনা উপজেলার মৃগা গ্রামে কনের বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল। বরযাত্রী রওনা হওয়ার আগমুহূর্তে বিয়েবাড়ির ১৫ জন স্পিডবোটটি নিয়ে কিছুক্ষণের জন্য হাওরে ঘুরতে যান।
এ সময় ধনু নদে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বাল্কহেডকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময় জেলেদের নৌকার সঙ্গে স্পিডবোটটির সংঘর্ষ হয়। পরে জেলেরা স্পিডবোটে উঠে চালকের সঙ্গে ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে স্পিডবোটটি উল্টে যায়। এতে ওই চারজন নিখোঁজ এবং তিনজন আহত হন। বাকিরা সাঁতার কেটে রক্ষা পান।
স্পিডবোট থেকে বেঁচে ফেরা আন্ধাইর গ্রামের ইয়াসমিন আক্তার বলেন, ‘আমাদের স্পিডবোটটি একটি নৌকার সঙ্গে ধাক্কা লাগে। তখন ওই নৌকায় থাকা লোকজন তর্কাতর্কির পর স্পিডবোটে উঠে চালককে মারধর করে। একপর্যায়ে স্পিডবোটটি ডুবিয়ে দেয়। তখন সবাই সাঁতরে তীরে উঠলেও চারজন নদে ডুবে নিখোঁজ হয়।
খালিয়াজুরী থানার ওসি মকবুল হোসেন জানান, ‘ধনু নদে নিখোঁজ ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নৌ-পুলিশ ঘটনাস্থলে রয়েছে এবং তারা আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছে। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
খালিয়াজুরির ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এম এ কাদের বলেন, ‘ঘটনার পরপর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার তৎপরতা চালান। রোববার পর্যন্ত ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। স্পিডবোট ডুবিয়ে দেওয়ার যে অভিযোগ করেছেন বেঁচে ফেরা লোকজন, সে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। ভুক্তভোগী পরিবার লিখিত অভিযোগ করলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন