শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


এম কামাল উদ্দিন, রাঙামাটি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৫, ০৬:০৯ পিএম

কাচালংয়ে বিলীন বহু বসতবাড়ি, দিশাহারা পাড়ের বাসিন্দারা

এম কামাল উদ্দিন, রাঙামাটি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৫, ০৬:০৯ পিএম

রাঙামাটির বাঘাইছড়ির লাল্যাঘোনা এলাকায় কাচালং নদী ভাঙনে বিলীন হচ্ছে বসতবাড়ি। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

রাঙামাটির বাঘাইছড়ির লাল্যাঘোনা এলাকায় কাচালং নদী ভাঙনে বিলীন হচ্ছে বসতবাড়ি। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

রাঙামাটির বাঘাইছড়ির লাল্যাঘোনা এলাকার কাচালং নদীর পাড়ের বাসিন্ধা নবীর হোসেন। নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে তার বসতবাড়ি। নদীতে মিশে গেছে তার ফসলি জমিও। সব হারিয়ে এখন তিনি দিশাহারা।

লাল্যাঘোনার এই বাসিন্ধা বলেন, ‘আমাদের এখন আর কোনো কূল-কিনারা নাই।’

নবীর মতো করুণ অবস্থা একই এলাকার মেহের আলীরও। তারও বসতবাড়িসহ জমিজামা নদী গর্ভে বিলীন। মেহের বলেন, ‘আমাদের সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে।’

লাল্যাঘোনার স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মুনাফ ও আব্দুল আলমেরও সবকিছু নদীর পানিতে মিশে গেছে। এখন কী করবেন ও কোথায় যাবেন পথ খুঁজে পাচ্ছে না তারা।

ভারতের মিজোরাম রাজ্যের পূর্বাঞ্চলীয় পর্বতশ্রেণি থেকে উৎসারিত হয়ে কয়েকটি ক্ষুদ্র স্রোতধারা রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি এলাকায় একত্রে মিলিত হয়ে কাসালং নদীর সৃষ্টি। এটি ‘সাজেক নদী’ নামেও পরিচিত। কর্ণফুলী নদীর একটি প্রধান উপনদীও।

রাঙামাটির বাঘাইছড়ির লাল্যাঘোনা এলাকায় কাচালং নদী ভাঙনে বিলীন হচ্ছে জমিজমা। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

উত্তর-দক্ষিণ বরাবর প্রবাহিত নদটি রাঙ্গামাটি থেকে প্রায় ২০ কিমি উত্তরে কেদারমারাতে এসে কর্ণফুলী নদীতে (কাপ্তাই হ্রদ) মিশেছে। নদীটি ৬৫ কিমি দীর্ঘ। সারা বছরই খরস্রোতা। ফলে জন্ম থেকেই পাড় ভাঙনে নদীটি ধীরে ধীরে আকার-আকৃতি বৃদ্ধি করছে।

‎সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নদী ভাঙন এলাকার লোকজন মানবেতর জীবনযাপন করছে। কেউ দেখছে না বা কেউ শুনছে না তাদের মনের কথা। প্রতি বছর উজানের ঢলে  ও নদীর শ্রোতে তাদের বাড়ি ঘর ভেঙে নদীতে চলে যায়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন লাইল্যাঘোণা এলাকাবাসী।

স্থানীয়রা বলছেন, নদী সৃষ্টির আগে থেকেই এর বেষ্টনীর ভেতরে অনেকেই বাড়ি ঘর নির্মাণ করে বসবাস করে আসছে। কিন্তু পাড় ভেঙে ছোট থেকে বড় নদী রূপান্তরিত হচ্ছে। এই নদী ভাঙনে তীরবর্তী বসতবাড়ি ও ফসলি জমিও ভাঙনের কবলে। কাচালং ভাঙনে অনেক আগেই বিলীন হয়ে গেছে লাল্যাঘোনার গ্রামের একমাত্র রাস্তা। 

স্থানীয়দের ভাষ্য, এই যাবৎ ৫০-৬০টি বাড়িঘর কাচালং নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে নতুন করে প্রায় ২৪টি পরিবার কাচালং নদীগর্ভে চলে গেছে। কিন্তু এই নদী ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ফলে বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে প্রতিনিয়ত গৃহহারাদের সংখ্যা বাড়ছে।

‎লাল্যাঘোনা বাসিন্ধাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই নদীটির ভাঙন চলতে থাকলেও বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন ও সরকার দেখেও না দেখার ভান করে বসে আছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাওবো) জরিপ করলেও বাঁধ নির্মাণের দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই।

স্থানীয়দের দাবি, প্রকল্প গ্রহণ করে নদী ও নদীর পাড়ের বসতবাড়ি ও ফসলি জমি রক্ষায় দ্রুত বাঁধ নিমার্ণ করা।

রাঙামাটির বাঘাইছড়ির লাল্যাঘোনা এলাকায় কাচালং নদী ভাঙনে বিলীন হচ্ছে বসতবাড়ি। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

জানতে চাইলে এ বিষয়ে কথা বলতে নারাজ বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমেনা মারজান।

তবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ সূত্র জানায়, ভাঙন রোধে মন্ত্রণালয়ে টেকসই বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রাক্কলন (ইস্টিমেট) প্রস্তাব করা হয়েছে।

তবে কবে নাগাদ এই বাঁধ নির্মাণ হবে তা নিয়ে ধোঁয়াশায় রয়েছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল আলম, ‘প্রতি বছর শুনে আসছি পানি উন্নয়ন বোর্ড জরিপ করে যাচ্ছে কিন্তু তার কোনো অগ্রগতি খুঁজে পাওয়া যায়নি।’

মেহের আলী বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় প্রশাসন চাইলে আমাদেরকে রক্ষা করতে পারত। এ ব্যাপারে কারও কোনো সদিচ্ছা বা আন্তরিকতা দেখতে পাচ্ছি না।’

আব্দুল মুনাফ বলেন, ‘আমাদের অন্যত্র পুনর্বাসনসহ জীবন-জীবিকা নির্বাহের ব্যবস্থা করে দেওয়া হোক। নাহয় প্রকল্প গ্রহণ করে নদী রক্ষা বাঁধের ব্যবস্থা করে দেওয়া হোক।’

নবীর হোসেন বলেন, ‘আমরা চাই নদী ভাঙনের কবল থেকে বাঁচতে।’

Link copied!