মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


কাজী মফিকুল ইসলাম

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৪, ২০২৫, ০২:০৯ পিএম

বিক্রি হচ্ছে না আমন চারা, দিশাহারা কৃষক

কাজী মফিকুল ইসলাম

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৪, ২০২৫, ০২:০৯ পিএম

আমন ধান। ছবি : রূপালী বাংলাদেশ

আমন ধান। ছবি : রূপালী বাংলাদেশ

আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়ায় কৃষিতে সমৃদ্ধ হয়ে উঠছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা। প্রযুক্তির কল্যাণে মৌসুম অনুযায়ী ধান আবাদ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। গেল বোরো মৌসুমে ধানের ফলন ও বাজার দর ভালো পাওয়ায় কৃষকরা বেজায় খুশি। তাই আমন ধান চাষে বেড়েছে কৃষকের আগ্রহ।

ইতিমধ্যে আমন চারা লাগানো প্রায় ১ মাস হয়ে গেছে। দিগন্তজুড়ে সবুজের সমারোহ হয়ে আছে। যতদূর দৃষ্টি যায় শুধু সবুজ আর সবুজ চোখে পড়ছে। কিন্তু জমিতে জমিতে পড়ে আছে আমন চারা। বিক্রি না হওয়ায় এখন চারা যেন গো-খাদ্য  হয়েছে। এ অবস্থায় অনেকটাই দিশাহারা হয়ে পড়েছে কৃষকরা। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আমন মৌসুমে বেশির ভাগ সময় অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত কিংবা বন্যা হওয়ার কারণে বীজতলা ক্ষতি গ্রস্ত হয়। এতে কৃষকরা জমি আবাদে অনেকটাই বিপাকে পড়ে যায়। আমন চারার কদর থাকায় অনেক কৃষক উঁচু জায়গায় বাণিজ্যিকভাবে বীজতলা তৈরি করে নিজের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বাকি চারাগুলো বিক্রি করে ভালো টাকা আয় করে থাকেন।

কিন্তু এবার দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত কিংবা বন্যা না হওয়ায় সময়মতো কৃষকরা বীজতলা তৈরি করে ধান রোপণ করেন। যারা আগে চারা ক্রয় করে ধান রোপণ করত আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বেশির ভাগ কৃষক নিজ জমিতে বীজতলা তৈরি করে জমি আবাদ করেন। এতে অনেকটাই বিপাকে পড়ে যায় বাণিজ্যিকভাবে বীজতলা তৈরি করা কৃষকরা। আমন চারা লাগানো প্রায় ১ মাস হয়ে গেছে। কিন্তু এখনও জমিতে জমিতে অবিক্রিত আমন চারা পড়ে থাকায় দিশাহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।

একাধিক কৃষক বলেন, প্রতি বছর আমন মৌসুমে কৃষক পর্যায়ে চারার ভালো কদর থাকে। বন্যা, বৃষ্টিসহ নানা কারণে নিম্ন এলাকায় বীজতলা তৈরি করা যায় না। যার কারণে চারা ক্রয় করে জমি আবাদ করতে হয়। কিন্তু এবার বন্যা কিংবা অতিরিক্ত বৃষ্টি না হওয়ায় বেশির ভাগ কৃষক নিজস্ব চারা দিয়ে জমি আবাদ করেন। এ ক্ষেতে বেশির ভাগ চারা অবিক্রিত অবস্থায় জমিতে পড়ে আছে। এখন কীভাবে ধারের টাকা পরিশোধ করবেন তা নিয়ে অনেকটাই যেন  চিন্তায় রয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, পৌর শহরসহ উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে প্রায় ৪ হাজার ২১২ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। ওইসব জমি আবাদ করতে ২৩৫ হেক্টর বীজতলা করা হয়।

পৌর শহরের তারাগন এলাকার  কৃষক মো. হারুন মিয়া বলেন, হারুন বলেন, দীর্ঘ প্রায় ১৭ বছর ধরে জমি বর্গা (ইজারা) নিয়ে মৌসুমী আমন চারা বিক্রি করছি। এবার  ৭ বিঘা জমি (বর্গা) ইজারা নিয়ে উচ্চফলনশীল জাতের ২৮ মণ ধানের আমন বীজতলা তৈরি করি। প্রতি ১ বিঘা জমিতে বীজ ধান দেওয়া হয় ৪ মণ।

হালচাষ, জমা, (ইজারা) বীজ ধানসহ মোট প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে ৭ বিঘা জমিতে বীজতলা তৈরিতে প্রায় ২ লাখ টাকা খরচ হয়। কিন্তু এ বছর আমন চারার কোনো চাহিদা নেই। এখনো প্রায় ২ বিঘার ওপর জমিতে আমন চারা পড়ে আছে।

গত বছর এই পরিমাণ জমিতে চারা তৈরি করে ২ লাখ টাকার ওপর আয় হয়ে ছিল। কিন্তু এবার বিক্রিতে দর ভালো না পাওয়া ও অনেক চারা বিক্রি না হওয়ায় বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। আগে যেখানে এক বিঘা জমির চালা ৮শ থেকে ৯শ টাকা বিক্রি হয়েছে, এবার ৩শ টাকাও বিক্রি হয়নি। এখন কীভাবে ধার-দেনা পরিশোধ করব তা নিয়ে চিন্তায় আছি।

সুমন বলেন, প্রতিবছর আমন মৌসুমে ধান চারার ভালো চাহিদা থাকায় বীজতলা তৈরি করে চারা বিক্রি করছি। এবার দেড় বিঘা জমিতে উচ্চফলনশীল জাতের চারা তৈরি করি। কিন্তু এরমধ্যে এক বিঘা জমিতে চারা পড়ে আছে। বিক্রি না হওয়ায় গো-খাদ্য হিসেবে পরিণত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন এ চারা তৈরি করতে অনেক টাকা খরচ হয়েছে। বিক্রি না হওয়ায় অনেক লোকসান গুনতে হচ্ছে।

উপজেলার ধরখার এলাকার কৃষক মো. তাজুল  ইসলাম বলেন, আমাদের এলাকা নিম্নাঞ্চল। প্রতিবছর বন্যা কিংবা অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতর কারণে আমার বীজতলা তৈরি করতে পারি না। যার কারণে চারা ক্রয় করে ধান আবাদ করতে হয়। কিন্তু এবার বন্যা না হওয়ায় বীজতলা তৈরি করে আমন ধান আবাদ করেছি। বর্তমানে জমির অবস্থা খুবই ভালো।

আখাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ রানা বলেন,  এ উপজেলায় এক মাসের ওপর হলো  আমন ধান আবাদ শেষ হয়েছে। কৃষকরা উচ্চফলনশীল নানা জাতের ধান আবাদ করেন। এবার বন্যা কিংবা অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় চারা নিয়ে কোনো সমস্যা হয়নি। ফলন ভালো রাখতে সার্বিকভাবে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, শেষ পযর্ন্ত যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আর কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটে তাহলে আমনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সম্ভাবনা রয়েছে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!