পেঁপে চাষ করে সফল হয়েছেন ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার কৃষি উদ্যোক্তা এরশাদ উদ্দিন মণ্ডল। তিনি রাওনা ইউনিয়নের খারুয়া বড়াইল গ্রামের বাসিন্দা। ৮০ শতক জমিতে ‘টপলেডি’ জাতের পেঁপে চাষ করে মাসে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা আয় করছেন তিনি। বাগানের সারিবদ্ধ গাছে ঝুলছে ছোট-বড় সবুজ রঙের অসংখ্য পেঁপে।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যে জমিতে আগে ধান চাষ হতো, সেই জমিতেই কৃষি উদ্যোক্তা এরশাদ উদ্দিন মণ্ডল পেঁপের বাগান করে সফল হয়েছেন। ৮০ শতক জমিতে উন্নত ফলনশীল টপলেডি জাতের পেঁপে চাষাবাদ করেছেন তিনি। মাত্র তিন মাসের মধ্যেই চারাগুলো চার থেকে পাঁচ ফুট লম্বা হয়েছে।
গাছগুলোর গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত পেঁপে ধরেছে। প্রথম বছরেই বাম্পার ফলন আশা করছেন তিনি। বাগান থেকেই ব্যবসায়ীরা প্রতিকেজি পেঁপে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা দরে কিনে নিচ্ছেন। পেঁপে বাগান করতে প্রায় চার লাখ টাকা খরচ হয়েছে, আর প্রথম বছরেই ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা আয়ের আশা করছেন এরশাদ উদ্দিন। তার বাগানে ৮ থেকে ১০ জন শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে।
অন্যান্য ফসলের তুলনায় পেঁপে চাষে খরচ কম ও লাভ বেশি হওয়ায় কৃষকরা এখন পেঁপে চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। এরশাদ উদ্দিন মণ্ডলের বাগান দেখে বেকার তরুণরাও অনুপ্রাণিত হচ্ছেন। তারা যদি এভাবে এগিয়ে আসে, তবে নিরাপদ ও বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনের মাধ্যমে ভোক্তাদের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা ডা. সুমন মিয়া বলেন, ‘আমি এখানে ব্যক্তিগত কাজে এসেছিলাম। দেখি খুব সুন্দর পেঁপে বাগান। খোঁজ নিয়ে জানলাম এটি কৃষি উদ্যোক্তা এরশাদ উদ্দিন মণ্ডলের। পেঁপে শরীরের জন্য অনেক উপকারী। আমরা অনেকেই পড়াশোনা শেষ করে বেকার হয়ে হতাশায় ভুগি। তাদের জন্য এটি হতে পারে দৃষ্টান্ত।’
স্থানীয় শাওন মণ্ডল বলেন, ‘আমাদের গ্রামের এরশাদ ভাই পেঁপে চাষ করে সফল হয়েছেন। আমরা তাকেও দেখে উদ্বুদ্ধ হচ্ছি এবং পেঁপেসহ বিষমুক্ত সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী হতে চাই।’
পেঁপে ব্যবসায়ী লিটন মিয়া বলেন, ‘আমার বাড়ি শ্রীপুর উপজেলার কাওরাদ গ্রামে। আমি এখান থেকে পেঁপে কিনে ঢাকার কারওয়ান বাজারে বিক্রি করি। এতে যে লাভ হয়, তাতে আমার সংসার ভালোভাবে চলে।’
কৃষি উদ্যোক্তা এরশাদ উদ্দিন মণ্ডল বলেন, ‘আমার একটি কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার আছে। পাশাপাশি এবার ৮০ শতক জমিতে টপলেডি জাতের পেঁপে চাষ করেছি। এই জাতের পেঁপের বাজারে প্রচুর চাহিদা। আমার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৫০ টন। এখন পর্যন্ত ১০ টন বিক্রি করেছি। আশা করছি, প্রথম বছরেই ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা মুনাফা পাব। যারা বেকার তরুণ বা ধানসহ অন্য ফসল চাষ করেন, তারা চাইলে পেঁপে চাষ করতে পারেন। এটি অন্যান্য ফসলের তুলনায় বেশি লাভজনক।’
গফরগাঁও উপজেলার ভ্যালেন্ট টেক লিমিটেডের মার্কেটিং অফিসার আজহারুল ইসলাম আহসান বলেন, ‘আমার পরামর্শে এরশাদ ভাই পেঁপে চাষ করে সফল হয়েছেন। যারা বেকার আছেন, তারা পতিত জমিতে পেঁপে ও কলা চাষ করে বেকারত্ব দূর করে স্বাবলম্বী হতে পারেন।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন