ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৫

স্কুলছাত্রী ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা 

নড়াইল প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৩, ২০২৫, ১২:২৮ পিএম
স্কুলছাত্রী ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা । ছবি- প্রতীকী

নড়াইল সদর উপজেলায় শ্রেণিকক্ষে এক শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার (২২ অক্টোবর) রাতে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজেদুল ইসলাম।

এর আগে, গত মঙ্গলবার ওই ঘটনায় শিক্ষকের বিচারের দাবিতে ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম মো. তরিকুল ইসলাম। তার বাড়ি নড়াইল সদর উপজেলায়।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পরিবারের অভিযোগ, চলতি মাসের ১৫ তারিখ বিকেলে বিদ্যালয়ের স্কুল ছুটির পর একটি শ্রেণির চারজন শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে প্রাইভেট পড়াচ্ছিলেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তরিকুল। এ সময় এক ছাত্রী মায়ের ডাকে সাড়া দিয়ে বাইরে যায়। আর দুই ছাত্রকে কৌশলে জাতীয় পতাকা খুলতে পাঠান তরিকুল ইসলাম। ফলে ভুক্তভোগী ছাত্রী কক্ষে একা হয়ে পড়ে। এই সুযোগে কক্ষের দরজা বন্ধ করে ধর্ষণচেষ্টা চালান তরিকুল। এ সময় শিক্ষার্থীর চিৎকার ও কান্নার শব্দে তার অন্য সহপাঠীরা ছুটে আসে। তারা দরজা ধাক্কা দিয়ে খুললে শিক্ষার্থীকে ছেড়ে দেন তরিকুল।

আরও জানা যায়, শিক্ষকের এমন কর্মকাণ্ড শিক্ষার্থীরা দেখে ফেলায় তাদের কাউকে না জানানোর অনুরোধ করেন অভিযুক্ত ওই শিক্ষক। শিক্ষার্থী বাড়িতে গিয়ে তার মাকে জানালে, সামাজিক অবস্থান ও সম্মানহানির ভয়ে চুপ থাকেন সকলে। ঘটনার তিনদিন পর ওই শিক্ষার্থীর পরিবারের পুরুষ সদস্যরা বিষয়টি জানতে পারেন। এ বিষয়টিকে ধামাচাপা দিতে ও ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে অভিযুক্ত শিক্ষক স্থানীয় পর্যায়ে তদবির চালান। পরে ভুক্তভোগীর গত ২১ অক্টোবর (মঙ্গলবার) রাতে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।

এদিকে, মঙ্গলবার দুপুরে বিদ্যালয়ের সামনে শিক্ষকের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। এ সময় সেদিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা ঘটনা তুলে ধরেন। এলাকাবাসী বলেন, আমাদের কোমলমতি শিশুদের মানুষ করার জন্য বিদ্যালয়ে পাঠায়। শিক্ষকরা তাদের বাবা-মায়ের যত্নে শেখাবেন। কিন্তু সেখানে এসে যদি শিক্ষকের দ্বারাই এমন ঘটনা ঘটে, এটা মানা যায় না। আমাদের শিশুরা তাহলে কার কাছে নিরাপদ? কোন ভরসায় আমরা স্কুলে পাঠাব।

ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর সাত দিনের ছুটি নিয়ে বাড়িতে অবস্থান করছিলেন তরিকুল ইসলাম৷ মঙ্গলবার রাতে মামলার পর গাঢাকা দেন তিনি। তবে ওই দিন দুপুরে ওই শিক্ষক বলেছিলেন, তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সত্য নয়। তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তোলা হয়েছে। স্থানীয় একটি মহল অনেকদিন ধরে তার পেছনে লেগেছে, এখন তিনি সেটা বুঝতে পারছেন। দীর্ঘবছর ধরে সেখানে তিনি শিক্ষকতা করছেন, আগে কখনো এমন অভিযোগ ওঠেনি।

নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজেদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে, তদন্ত চলছে। আসামিকে গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান অব্যাহত।