বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের নির্বাহী কমিটির সভায় ২১ দফা দাবি জানানো হয়েছে। শনিবার (২৫ অক্টোবর) সকালে কক্সবাজারে বিএফইউজে নির্বাহী পরিষদের সভায় দাবিগুলো জানানো হয়।
দাবিগুলোর মধ্যে, নো ওয়েজ বোর্ড নো মিডিয়া’ নীতি কার্যকর, সাংবাদিকদের সর্বনিম্ন বেতন ৩৫ হাজার টাকা নির্ধারণ, প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার জন্য নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন ও দশম ওয়েজ বোর্ড গঠন, সাংবাদিক সুরক্ষা নীতিমালা প্রণয়ন, সাংবাদিকদের সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন নির্ধারণ, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিরোধী সকল কালা কানুন বাতিল, আইন অনুযায়ী সাংবাদিকদের ন্যায্য পাওনা আদায়ের জন্য পৃথক শ্রম আদালত স্থাপন করার কথা উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া আরও বেশ কিছু দাবি রয়েছে।
বিএফইউজে'র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীনের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরীর সঞ্চালনায় বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনায় অংশ নেন বিএফইউজে সহ-সভাপতি একেএম মহসিন, সহকারী মহাসচিব বাছির জামাল, ড. সাদিকুল ইসলাম স্বপন ও এহতেশামুল হক শাওন, সাংগঠনিক সম্পাদক এরফানুল হক নাহিদ, কোষাধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম, দফতর সম্পাদক মো. আবু বকর, প্রচার সম্পাদক শাজাহান সাজু, নির্বাহী সদস্য শাহীন হাসনাত, অপর্না রায়, মো. আবু হানিফ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম, সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজারের সভাপতি নুরুল ইসলাম হেলালী ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাফর, সাংবাদিক ইউনিয়ন ময়মনসিংহের সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুল ইসলাম, খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. আনিসুজ্জামান, সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সভাপতি মো. আকরামুজ্জামান ও সাধারণ সম্পাদক এসএম ফরহাদ, বগুড়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এস এম আবু সাঈদ, রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল আউয়াল, দিনাজপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহফিজুল ইসলাম রিপন, সিলেট সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা বদর, নারায়ণগঞ্জ সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মাহফুজুর রহমান, রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সালেকুজ্জামান সালেক, গাজীপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি এইচ এম দেলোয়ার, সাংবাদিক ইউনিয়ন মুন্সিগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন মানিক, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান, কুমিল্লা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল ভূঁইয়া, ফেনি সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সিদ্দিক আল মামুন প্রমুখ।
সভায় সংবাদপত্র, রেডিও, টেলিভিশন, অনলাইন এমনকি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোর জন্য একটি সমন্বিত জাতীয় গণমাধ্যম নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানিয়ে বলা হয়। এই সমন্বিত নীতিমালার আওতায় প্রতিটি ভিন্ন গণমাধ্যমের জন্য ভিন্ন নীতিমালা থাকবে। অনেকগুলো নীতিমালা প্রণয়ন না করে একটি পূর্ণাঙ্গ ও সমন্বিত নীতিমালা প্রণয়ন করা হলে সেটি প্রয়োগ করা ও মেনে চলা সহজ হবে।
বাংলাদেশে এ পর্যন্ত গণমাধ্যমের জন্য ৫০টি আইন, নীতিমালা ও বিধিবিধান রয়েছে যা বিশ্বের কোথাও নেই। অথচ এদেশে এখনো একটি পূর্ণাঙ্গ ও সমন্বিত গণমাধ্যম নীতিমালা করা যায়নি।
এক প্রস্তাবে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিকদের জন্য নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নের কথা বলা হলেও কার্যত তা হচ্ছে না। অথচ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েই চলেছে। তাই বর্তমান সরকারকে দ্রুত নবম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন এবং দশম ওয়েজ বোর্ড গঠনের বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। একই সঙ্গে সংবাদপত্র, অনলাইন, টেলিভিশন, রেডিও ও মাল্টিমিডিয়ার জন্য অভিন্ন ওয়েজবোর্ড করতে হবে।
সভায় সাংবাদিকদের সপ্তাহিক ছুটি ২ দিন নির্ধারণ করার দাবি জানিয়ে বলা হয়, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সপ্তাহে ২ দিন ছুটি ভোগ করে। অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও ২ দিন ছুটির ব্যবস্থা চালু রয়েছে। সাংবাদিকদের কাজের কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই। সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিন সাপ্তাহিক ছুটিও পান না। এতে তাদের ওপর শারীরিক ও মানসিক চাপ বাড়ছে।
সভার এক প্রস্তাবে বলা হয় সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে যেকোনো মূল্যে সুরক্ষা দিতে হবে। আইনি কাঠামো দ্বারা সুরক্ষা না দিলে সাংবাদিক সমাজ প্রতিনিয়ত রাষ্ট্রযন্ত্র দ্বারা নিগৃহীত হতে থাকবে এবং বর্তমান সময়ে প্রতিনিয়ত তাই হচ্ছে।
বিএফইউজের সভায় বলা হয়, সংবাদপত্রের ওপর আরোপিত করপোরেট ট্যাক্সের উচ্চহার (২৭ দশমিক ৫ শতাংশ) এই শিল্পকে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিচ্ছে বলে মনে করে কমিশন। তারা বলছে, তৈরি পোশাকশিল্পে এই হার ১৫ শতাংশ। করপোরেট ট্যাক্সের উচ্চহার ও অগ্রিম কর আদায়ের ধারা অব্যাহত থাকলে অনেক প্রতিষ্ঠিত সংবাদপত্র আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই বন্ধ হয়ে যাবে। এটি শক্তিশালী গণমাধ্যম গড়ে তোলার পথে বড় ধরনের প্রতিবন্ধক। এজন্য তা অচিরেই অপসারণ করা উচিত।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন