মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৭, ২০২৫, ১০:৪৮ পিএম

মারা গেছেন জুলাই যোদ্ধা সালাউদ্দিন, স্প্লিন্টার ছুঁয়ে ছিল যার শ্বাসনালি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৭, ২০২৫, ১০:৪৮ পিএম

মারা গেছেন জুলাই যোদ্ধা গাজী সালাউদ্দিন। ছবি- সংগৃহীত

মারা গেছেন জুলাই যোদ্ধা গাজী সালাউদ্দিন। ছবি- সংগৃহীত

জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে এক চোখের দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছিলেন গাজী সালাউদ্দিন। অন্য চোখেও দেখছিলেন ঝাপসা। মুখের পাশাপাশি গলায়ও একাধিক গুলি লেগেছিল তার। গলায় লাগা গুলির স্প্লিন্টার শ্বাসনালী ছুঁয়ে ছিল—সেটি বের করা দুঃসাধ্য। শরীরে এ স্প্লিন্টার নিয়েই ১৫ মাস পর রোববার (২৬ অক্টোবর) রাতে মারা যান এই জুলাই যোদ্ধা।

সালাউদ্দিনের বড় ছেলে আমির ফয়সাল রাতুল বলেন, ‘চোখ ছাড়াও বাবার সারা মুখে, গলায়, হাতেও গুলি লেগেছিল। গলার স্প্লিন্টারগুলো বের করা যায়নি। ডাক্তার তাকে কথা বলতে নিষেধ করেন। গত কয়েকদিন খুব কাশতেন, সঙ্গে রক্তও পড়ত। রোববার সন্ধ্যার পর শ্বাসকষ্ট শুরু হলে রাত ৯টার দিকে তাকে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে তিনি মারা যান।’

নারায়ণগঞ্জের গোদনাইলে বাড়ি সালাউদ্দিনের। পৈতৃক সূত্রে পাওয়া একতলা ভবনের দুটি কক্ষে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে থাকতেন তিনি। অন্তর্বর্তী সরকারের গেজেটভুক্ত অতি গুরুতর আহতের তালিকার ১৩২ নম্বরে তার নাম। সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতার পাশাপাশি তার কর্মসংস্থানের জন্য মুদি দোকানের মালামালও কিনে দিয়েছিল জুলাই ফাউন্ডেশন।

শারীরিক অবস্থার কারণে দোকানে খুব একটা সময়ও দিতে পারতেন না সালাউদ্দিন। বড় ছেলে রাতুলই বসতেন দোকানটিতে।

পরিবারের সদস্যরা বলেন, গত বছরের জুলাইতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জ শহর যখন উত্তাল তখন ভূঁইগড় এলাকার একটি দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন সালাউদ্দিন। ছাত্র-জনতার এই আন্দোলনে অংশ নেন সালাউদ্দিনও। ১৯ জুলাই আরও অনেকের সঙ্গে গুলিবিদ্ধ হন তিনিও।

নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পরদিন তাকে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারও হয় তার। কিন্তু এক চোখের দৃষ্টি আর ফিরে পাননি। শুধু তাই নয়, শরীরের কয়েকটি অংশে গুলির স্প্লিন্টার বয়ে বেড়াচ্ছিলেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে রাতুল বলেন, ‘শুরুর দিকে ধারদেনা করে বাবার চিকিৎসা চালিয়েছি। পরে সরকার পতনের পর নতুন সরকার সাহায্য-সহযোগিতা করল। কিন্তু তার চোখের দৃষ্টি আর উনি পাননি। গলার স্প্লিন্টারটাও তাকে অনেক ভোগাচ্ছিল। কাশির সঙ্গে রক্ত পড়ত, গলা ব্যথা ছিল; কিন্তু আমরা জিজ্ঞাসা করলেই চেপে যেতেন। কাশি উঠলে ঘর থেকে বেরিয়ে গিয়ে কাশতেন।’

তবে আরও উন্নত চিকিৎসা করানো সম্ভব হলে স্বামীকে বাঁচানো যেত বলে মনে করেন স্ত্রী রানী বেগম। স্বামীকে হারিয়ে দুই সন্তানকে নিয়ে ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত এই গৃহবধূ বলেন, ‘আমাদের কোনো পুঁজি নাই। উনি যাই পাইতেন কাজ করতেন। এ দিয়েই সংসার চলত। এভাবে তারে হারামু ভাবি নাই।’

সোমবার সকালে গোদনাইল বাজারে সালাউদ্দিনের জানাজা হয়। পরে স্থানীয় একটি কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে বলে জানান পরিবারের সদস্যরা।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!