বুধবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বরগুনা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৯, ২০২৫, ০১:২৪ এএম

চাঁদা না পেয়ে স্কুল শিক্ষককে অপহরণ করে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন

বরগুনা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৯, ২০২৫, ০১:২৪ এএম

আহত শিক্ষক। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

আহত শিক্ষক। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

বরগুনার আমতলী উপজেলার আরপাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নে চরকগাছিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষককে পূর্ব শত্রুতার কারণে অপহরণ করে চাঁদা দাবি ও মারধর করা হয়েছে। চাঁদা না পেয়ে রাতভর তাকে নির্যাতন করায় ঐ শিক্ষক শ্রবণশক্তি হারিয়েছেন। এ ঘটনায় ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আমতলী থানায় মামলা হয়েছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষকের নাম মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি বরগুনা সদর উপজেলার গৌরচন্না ইউনিয়নের ধুপতি গ্রামের ইউনুস আলী মীরের ছেলে।

একই সঙ্গে চরকগাছিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ইংরেজি পাঠদান করার কর্মরত সহকারী শিক্ষক। ঘটনার সঙ্গে প্রধান অভিযুক্ত আসামি হলেন আমতলী হলদিয়া ইউনিয়নের আমিনিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক ও চরকগাছিয়া গ্রামের মৃত রশীদ মোল্লার ছেলে মিজানুর রহমান।

এ ঘটনায় অন্য আসামিরা হলেন ঘোপখালী গ্রামের মৃত ছালাম তালুকদারের ছেলে আবুল কালাম আজাদ ওরফে নয়া মিয়া, তালতলী উপজেলার পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের মনসাতলী গ্রামের আবুল কালাম তালুকদারের ছেলে তোতা মিয়া ও ঘোপখালী গ্রামের শাহজাহান তালুকদারের ছেলে মো. সেলিম। এ ঘটনায় ৩ থেকে ৪ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। 

জানা গেছে, চরকগাছিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ইংরেজি শিক্ষক নিয়োগ পদে মো. রফিকুল ইসলাম ও প্রধান আসামি মিজানুর রহমান আবেদন করে। সেখানে রফিকুল ইসলামের চাকরি হওয়ায় বিষয়টি স্বাভাবিক ভাবে মেনে নিতে পারেনি মিজানুর রহমান। এরপর থেকেই তিনি রফিকুল ইসলামকে প্রতিশোধ নেয়ার সুযোগ খুঁজতে থাকে।

গত ২১ অক্টোবর মিজানুর রহমান তার দলবল নিয়ে  বিদ্যালয়ের ছাত্রবাসে ঢুকে গলায় দেশীয় অস্ত্র ধরে এবং স্টীলের লাইট দিয়ে আঘাত করে শিক্ষক রফিকুল ইসলামকে আহত করে।

এ সময় তারা তাকে খুনের ভয়ভীতি দেখিয়ে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ সময় আসামিরা তার ল্যাপটব ও ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটিও সঙ্গে করে নিয়ে যায়। আসামিরা কলাবাগানের নিয়ে ছোট একটি ঘরের মধ্যে রাতভর তার ওপর নির্যাতন চালায় এবং ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তার কাছে টাকা না থাকার কথা বললে এ সময় আসামিরা ব্যাপক মারধর করে। মানিব্যাগ হাতিয়ে সঙ্গে থাকা টাকা পয়সা নিয়ে যায়। এ ছাড়া তার মানিব্যাগে থাকা সোনালী ব্যাংকের এটিএম কার্ড ও তার পাসওয়ার্ড নিয়ে নেয় আসামিরা। আসামিদের নির্যাতনে অসুস্থ হয়ে পড়লে সকালে একটি মোটরসাইকেলে করে ঐ ছাত্রাবাসের সামনে ফেলে যায়।

এ ঘটনা জানতে চাইলে শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জানান, আমি কেন বরগুনা থেকে এসে এখানে শিক্ষক নিয়োগ পেলাম এটা কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি মিজানুর রহমান। সেই রেশ ধরে মিজানুর রহমান আমাকে মারধর করে খুনের ভয় দেখিয়ে অপহরণ করে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।

তাদেরকে টাকা দিতে পারেনি বলে আমার শরীরের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছে।

তাদের নির্যাতনে আমার শ্রবণশক্তি ৬০ শতাংশ হারিয়ে ফেলেছি। রাতভর নির্যাতন করে আমাকে ফেলে রেখে যায় তারা। আমার অসুস্থতা দেখে অন্যান্য শিক্ষকরা আমাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। আসামিরা আমার মোটরসাইকেল, ল্যাপটব, এটিএম কার্ডের থাকা ৮০ হাজার টাকা নিয়ে গেছে। 

এ বিষয় জানতে চাইলে অভিযুক্ত মিজানুর রহমানের মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসীর অভিযোগ, মিজানুর রহমানের সহযোগীরা গত ৫ আগস্টের পর থেকে বেপরোয়া হয়ে গেছে। লুটপাট, চাঁদাবাজি, মাদকসেবনসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। মো. রফিকুল ইসলামের মতন একজন ভদ্র ও নিরীহ শিক্ষককে মারধর করে তার টাকা পয়সা, ল্যাপটব মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নেওয়ায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ জানিয়েছেন। 

এ বিষয়ে আমতলী থানার অফিসার ওসি দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, শিক্ষককে নির্যাতন করে অপহরণ ও চাঁদাবাজি ঘটনায় সোমবার রাতে আমতলী থানায় মামলা রুজু হয়েছে।আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশি অভিযান চলছে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!