বগুড়ার ধুনট উপজেলার চৌকিবাড়ি ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ভূবনগাঁতি গ্রামের সেলিম রেজার ছেলে শান্ত রেজা সাব্বির। ছাত্র জনতার গনঅভ্যুত্থানের আগে ছিলেন ছাত্রলীগ নেতা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাদের সাথে ছবি তুলে করতেন ফেসবুক পোস্ট।
স্থানীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এমপি সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে চেয়েছেন ভোট। সেই শান্ত রেজা সাব্বির পেলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ছাত্রদল নেতা বলেন, শান্ত রেজা সাব্বির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী। গত ৫ আগস্টের আগে সে ছাত্রলীগ করার সুবাদে আওয়ামী লীগ মনা কয়েকটি সংগঠনের সাথেও যুক্ত ছিলেন। সরকার পতনের পর শান্ত রেজা সাব্বির বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমানের হাত ধরে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলে সরব হয়ে উঠেন।
এর আগে কখনো তাকে ছাত্রদলের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে দেখা যায়নি। ছাত্রলীগের রাজনীতিতে থাকাকালীন তার বিভিন্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এখনো দেখা গেলেও কৌশলগত ভাবে পরিচয় গোপন রেখে ওই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নতুন কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছিলেন।
শান্ত রেজা সাব্বিরের ছাত্রলীগ থেকে ছাত্রদলে ফেরার ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের দায়িত্বপ্রাপ্ত ৩ জন নেতা ছাত্রলীগের কোন নেতাকে পদ দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করে ত্যাগী ছাত্রদল নেতাকর্মীদের শান্ত করেন। কিন্তু ২৯ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের পূর্নাঙ্গ কমিটিতে তাকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে দেখে নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ছাত্রলীগ নেতাকে ছাত্রদলের কমিটিতে পদায়ন করে কেন্দ্রের নেতারা ত্যাগীদের সাথে প্রতারণা করেছে।
সদ্য বিদায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রদল নেতা বলেন, আমি চাইলে ওই কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে আসতে পারতাম। আমি আসিনি, কারণ আমি জুনিয়রদের সুযোগ দিয়েছি। তার মানে এই নয় ছাত্রলীগ দিয়ে ছাত্রদলের কমিটি করতে হবে। দুঃসময়ে দলের রাজনীতি করে এখন এসে এমন কমিটি দেখতে হলো এটা খুব দুঃখজনক বিষয়।
তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি চাকসু নির্বাচনে ভরাডুবির কারণে ছাত্রদল মনোনীত অনেক প্রার্থী, নবগঠিত কমিটির সদস্য সংখ্যার থেকেও কম ভোট পেয়েছেন। এই কমিটি ছাত্রদলের গঠনতন্ত্রের বাহিরে গিয়ে ৪২০ সদস্য করে শুধু জনবল বাড়িয়েছে। আমার প্রশ্ন হলো বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা তাহলে কি চাকসু নির্বাচনে শিবির কিংবা অন্য প্রার্থীদের ভোট দিয়েছে?
ছাত্রদল নেতা আরো বলেন, কমিটিতে দেখতে পেলাম সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ স্থগিত করা হয়েছে। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম চাকসু নির্বাচনের আগমুহূর্তে শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে সিনিয়র সহ-সভাপতি মামুনুর রশিদ মামুনকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
তবে, মামুনুর রশীদ মামুন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের একজন নিবেদিত প্রান ছিলো। তাকে উদ্দেশ্যপ্রনোদিত ভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে মনে করি। মামুন ছাত্রলীগ ও বিতর্কিত কাউকে কমিটিতে রাখার বিপক্ষে ছিলো। পূর্নাঙ্গ কমিটির তালিকা কেন্দ্রে জমা দেওয়ার সময় সে অসম্মতি দেয়ায় কি তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে কিনা, এটা একটি বিষয়।
শান্ত রেজা সাব্বিরের নামে আগেও একটি নিউজ হয়েছিল। তখন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সহ-সভাপতি গণমাধ্যমকর্মীকে জানান এই ছেলে কমিটিতে কোন পদ পাবে না। তাহলে তিনি কিভাবে পদ পলেন? এমন প্রশ্ন যেমন উঠেছে বগুড়ার ধুনট উপজেলা জুড়ে তেমনি বিতর্কিত হচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছত্রদলের নতুন কমিটি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, শান্ত রেজা সাব্বির কখনো বিএনপি বা ছাত্রদলের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন না। রাতারাতি সেই সাব্বিরই এখন খোলস পাল্টে যোগ দিয়েছেন ছাত্রদলে।
২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের আগে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন তিনি। তার বাবা আওয়ামী লীগের নেতা হওয়ার কারণে সেই সময়ে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম নির্যাতনসহ আন্দোলনের সময় স্থানীয় ছাত্রদল কর্মীদের বাড়ি বাড়ি পুলিশ পাঠিয়ে হয়রানি করারও অভিযোগ রয়েছে শান্ত রেজা সাব্বির ও তার বাবার বিরুদ্ধে।
সেই ছাত্রলীগ নেতা কিভাবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের মত গুরুত্বপূর্ণ একটি ইউনিটে পদ পেলেন? কারা তাকে ছাত্রলীগ থেকে ছাত্রদলে পুনর্বাসন করলেন? এমন শত প্রশ্ন ও অভিযোগ ত্যাগী নেতাকর্মীদের মাঝে। ছাত্রদল নেতারা তাকে বহিষ্কার করে ছাত্রদলকে কলঙ্কমুক্ত করতে কেন্দ্রীয় নেতাদের অনুরোধ জানিয়েছেন।

 
                             
                                    
 সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
       -20251030125712.webp) 
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       -20251025002118.webp) 
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন