বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে টানা দু’দিনের বৃষ্টিতে বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় কৃষি আবাদে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে—বিশেষ করে গত শুক্রবার রাতে মাত্র চার ঘণ্টার ভারি বৃষ্টিতে—উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। ভুট্টা, ধান, আলু, কাঁচামরিচসহ শীতকালীন রবি শস্যের খেত জলমগ্ন হয়ে পড়ায় কৃষকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে হতাশা ও উদ্বেগ। প্রাকৃতিক দুর্যোগের এই ধাক্কায় শেরপুরের কৃষকসমাজের মুখে নেমে এসেছে দুশ্চিন্তার ছায়া।
শেরপুর উপজেলার খানপুর, খামারকান্দি, সুঘাট, গাড়ীদহ ও মির্জাপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, কৃষকরা খেতের পানি নিষ্কাশনের চেষ্টা করছেন। কেউ কেউ ক্ষতিগ্রস্ত জমি থেকে ফসল তুলে ঘরে নেওয়ার চেষ্টা করলেও অধিকাংশ জমি এখনো পানির নিচে।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, এ বছর ভালো ফলনের আশায় তারা ধান, ভুট্টা, কাঁচামরিচ, আলু ও বিভিন্ন শাকসবজির চাষ করেছিলেন। কিন্তু হঠাৎ টানা বৃষ্টিতে মাঠের জমি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় অধিকাংশ খেতের ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। অনেক জায়গায় বীজতলাও নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে আগামী মৌসুমের রোপণ ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
হঠাৎ এমন দুর্যোগে হতাশ কৃষকরা এখন সরকারি সহযোগিতা ও প্রণোদনার আশায় দিন কাটাচ্ছেন। কেউ কেউ বলেন, ‘প্রতি বছরই কিছু-না-কিছু প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসে। এবারও বৃষ্টিতে আমাদের সব ফসল ভেসে গেল। এখন সরকার সহায়তা না দিলে কীভাবে টিকব জানি না।’
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, টানা বৃষ্টিতে শত শত হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ধান ও ভুট্টা চাষে। ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নির্ধারণে কৃষি বিভাগ মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ শুরু করেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোছা. ফারজানা আক্তার রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘হঠাৎ ভারি বৃষ্টির কারণে অনেক খেতে পানি জমেছে। কৃষকদের ক্ষতি কমাতে আমরা দ্রুত পানি নিষ্কাশন কার্যক্রম এবং ক্ষতিগ্রস্ত জমির তালিকা তৈরির কাজ করছি। প্রয়োজন হলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’



সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন