স্ত্রীর সাবেক প্রেমিকের ছুরিকাঘাতে আবু বক্কর আসিফ (২৬) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। আসিফ কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়নের কেন্ডা গ্রামের মরহুম ফটিক মিয়ার ছেলে। এর আগে, গত ৮ নভেম্বর আসিফ সদর দক্ষিণ উপজেলার আবদুল্লাহপুর গ্রামের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গেলে দুই ব্যক্তি তাকে ছুরিকাঘাত করেন।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার পিজি হাসপাতালে মারা যান।
নিহত আসিফের পরিবারের দাবি, স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার সুইটির (১৯) সাবেক প্রেমিক রাব্বি ওরফে বাপ্পি নামে এক যুবক তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাতে আহত করেন। আসিফের মৃত্যুর তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন সদর দক্ষিণ মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ সেলিম।
নিহত আসিফের ছোট ভাই আরাফাত হোসেন জানান, ‘তার ভাই আবু বক্কর আসিফ দীর্ঘ বছর সৌদি আরবে ছিলেন। দুই মাস আগে তিনি ছুটিতে দেশে আসেন। তিনি গত ২৭ অক্টোবর জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার আবদুল্লাহপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার সুইটিকে বিয়ে করেন। গত ৮ নভেম্বর দুপুরে তিনি নববিবাহিত স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে যান। একই দিন সন্ধ্যায় শ্যালক শান্তসহ আসিফ অলির বাজারে ঘুরতে যান। কিছুক্ষণ পর পায়ে হেঁটে তারা আবদুল্লাহপুরের উদ্দেশে রওনা হন। আবদুল্লাহপুর এলাকায় সাদিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসার সামনে পৌঁছালে আগ থেকে ওত পেতে থাকা বাপ্পি ও পারভেজ নামে দুই যুবক আমার ভাইকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে সদর দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার পিজি হাসপাতালে নেওয়া হলে শুক্রবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। আমরা পরে জানতে পারি, বাপ্পি নামের এক যুবকের সাথে আসিফের স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার সুইটির বিয়ের আগে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, এ হত্যাকাণ্ডের সাথে ভাইয়ের স্ত্রীও জড়িত।’
আরাফাত আরও অভিযোগ করেন, ‘ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নিতে ভাবি সুমাইয়া আক্তার সুইটি সদর দক্ষিণ থানায় ছুরিকাঘাতের একটি মামলা দায়ের করে। আমি ভাই হত্যার বিচার চাই। এ ঘটনায় আমরা আদালতে ভাবিকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করব।’
অভিযোগ সম্পর্কে সুমাইয়া আক্তার সুইটির বাবা দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘এ হত্যাকাণ্ডের সাথে আমার মেয়ে কোনোভাবেই জড়িত নয়। বিয়ের আগে আমার মেয়ের সাথে কারও প্রেমের সম্পর্ক ছিল না। আমার মেয়ে মোবাইলও ব্যবহার করত না। আমি হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’
সদর দক্ষিণ মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ সেলিম বলেন, ‘ঘটনার দিন নিহত আসিফ শ্বশুরবাড়িতে যাওয়ার সময় অভিযুক্ত বাপ্পি ও পারভেজের শরীরের সাথে ধাক্কা লাগে। এর জের ধরে তারা আসিফকে ছুরিকাঘাত করে। অভিযুক্তরা খারাপ প্রকৃতির। আমরা গত ৮ নভেম্বর রাতেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ করি। শুনেছি, শুক্রবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় আসিফ মারা যান। ইতোমধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে। স্ত্রী সুইটি তার স্বামী আসিফ হত্যার সাথে জড়িত এমন অভিযোগ সম্পর্কে ওসি বলেন, এ ধরনের কোনো অভিযোগ আমরা এখনো পাইনি। মামলাটি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।’



সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন