দিনাজপুরের হাকিমপুর (হিলি) উপজেলায় গত চার থেকে পাঁচ দিন ধরে ভারত থেকে আগত মুখপোড়া একটি হনুমান ঘুরে বেড়াচ্ছে বিভিন্ন সরকারি দপ্তর, অফিসপাড়া ও জনবহুল এলাকায়। অস্বাভাবিক হলেও হনুমানটির এমন অবাধ বিচরণ স্থানীয়দের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। তবে আশ্চর্যের বিষয়- হনুমানটি একেবারেই হিংস্র নয় বরং মানুষের সঙ্গে বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করছে। বিশেষ করে স্কুলপড়ুয়া শিশুদের মাঝে এটির প্রতি গভীর আগ্রহ দেখা গেছে।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলা কৃষি কার্যালয়ে দেখা যায় মুখপোড়া হনুমানটিকে। অফিসের সামনে ভিড় জমিয়েছে কৌতূহলী জনতা। কেউ ছবি তুলছে, আবার কেউ কলা কিংবা রুটি হাতে এগিয়ে দিচ্ছে তাকে। হনুমানটি কোনো ধরনের ভীতি বা প্রতিরোধ ছাড়াই সব খাবারই গ্রহণ করছে, এমনকি শিশুদের সঙ্গে খেলাও করছে নির্ভয়ে।
স্থানীয় কয়েকজন শিশু শিক্ষার্থী আনন্দভরে বলেন, ‘সকাল থেকেই আমরা হনুমানটিকে দেখছি। সে আমাদের সঙ্গে খেলছে। আমরা তাকে কলা, রুটি দিচ্ছি—সবই খাচ্ছে। সে আমাদের কিছুই করছে না। তাকে খুব ভালো লাগছে আমাদের। যদি সে আমাদের সঙ্গে যেত, তাহলে আমরা তাকে বাড়ি নিয়ে যেতাম।’
শিশুদের এমন উচ্ছ্বাসে বোঝা যায়, অচেনা প্রাণী হলেও হনুমানটি অল্প সময়েই তাদের বন্ধু হয়ে উঠেছে।
হাকিমপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মেজবাহুর রহমান জানান, ‘গতকাল রাত থেকেই আমাদের অফিস এলাকাতেই অবস্থান করছে মুখপোড়া হনুমানটি। ধারণা করা হচ্ছে, ভারতীয় কোনো ট্রাকে করে সীমান্ত পেরিয়ে এটি হিলিতে এসেছে। বিষয়টি আমরা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। তিনি দ্রুতই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।’
অফিসপাড়ায় অপ্রত্যাশিত অতিথির মতো আগত হনুমানটিকে ঘিরে এখন পুরো এলাকায় আলোচনা চলছে। কেউ বলছেন এটি পথ হারিয়ে এসেছে, কেউ আবার অনুমান করছেন আগুনে পোড়া বা দুর্ঘটনায় আহত হয়ে দলছুট হয়েছে। তবে যে কারণেই আসুক না কেন, স্থানীয়দের মনোযোগ এখন পুরোপুরি এই মুখপোড়া হনুমানকে ঘিরেই।
দিনভর সরকারি অফিস, বিদ্যালয় ও বসতবাড়ির সামনে দেখা মিলছে এই হনুমানটিকে। মানুষও তাকে বিরক্ত না করে বরং খাবার দিচ্ছে, পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছে এবং তার নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতার কথাও বলছে।
এদিকে ছোট-বড় সবাই এখন অপেক্ষায়—শেষ পর্যন্ত কীভাবে যত্ন নেওয়া হবে ভারত থেকে আসা এই মুখপোড়া হনুমানটির।



সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন