চট্টগ্রামের আনোয়ারায় আবারও অনুমোদনহীন হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার অভিযোগ উঠেছে। বটতলী শাহ মোহছেন আউলিয়ার পশ্চিম পাশে ‘সাঙ্গু ট্রমা জেনারেল হাসপাতাল পিএলসি’ নামে একটি নতুন হাসপাতাল অনুমোদন ছাড়া জোরেশোরে প্রচারণা চালিয়ে উদ্বোধনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যানার, ফেস্টুন, ভিডিও বিজ্ঞাপনসহ বিভিন্নভাবে হাসপাতালটির প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, যে স্থানে হাসপাতালটি গড়ে তোলা হচ্ছে সেখানে কোনো সরকারি অনুমোদন, লাইসেন্স, অবকাঠামো মূল্যায়ন কিংবা প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা হয়নি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়া হাসপাতাল পরিচালনা আইনত দণ্ডনীয় হলেও উদ্যোক্তারা বিষয়টি উপেক্ষা করে প্রচারণা চালাচ্ছেন। এমনকি শীঘ্রই উদ্বোধন হবে বলে প্রচার করা হচ্ছে, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে।
আনোয়ারার সচেতন নাগরিকরা অভিযোগ করে বলেন, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অনুমোদনহীন বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে। এসব ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ভুল চিকিৎসা, ভুল রিপোর্ট ও নানা অনিয়মের কারণে জনমনে নানা প্রশ্ন ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
তারা আরও বলেন, হাসপাতাল মানে মানুষের জীবন নিরাপত্তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থান। সেখানে চিকিৎসা সরঞ্জাম, প্রশিক্ষিত ডাক্তার, নার্স, ওয়ার্ডবয়, আইসিইউ সক্ষমতা, ইমার্জেন্সি সাপোর্ট—সবকিছুর নিয়ম অনুযায়ী যাচাই-বাছাই বাধ্যতামূলক। অথচ সাঙ্গু ট্রমা জেনারেল হাসপাতাল পিএলসি কোনো আইনি অনুমোদন ছাড়াই রোগী আকর্ষণের নামে প্রচারণা চালাচ্ছে, যা ভবিষ্যতে বড় ধরনের বিপদের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
নাজিম উদ্দিন নামে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা ভালো কাজ, কিন্তু তার আগে সরকারের অনুমোদন নেওয়া বাধ্যতামূলক। অনুমোদন ছাড়া উদ্বোধন করা মানে মানুষের জীবনের সঙ্গে খেলা করা।’
সোহেল নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘অনুমোদন ছাড়া হাসপাতাল চালানোর সঙ্গে যে চিকিৎসক বা উদ্যোক্তা জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা উচিত। পূর্বেও অনুমোদনহীন হাসপাতালের কারণে রোগীর মৃত্যুসহ নানা জটিল ঘটনা ঘটেছে। নীতিবহির্ভূত চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান বন্ধে প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে। অনুমোদনবিহীন প্রতিষ্ঠান বন্ধ না করলে রোগীদের জীবন বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
হাসপাতালটির পরিচালক ডা. মিজানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মাহতাবউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘অনুমোদনহীনভাবে হাসপাতাল চালালে অভিযান চালিয়ে তা বন্ধ করা হবে।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউওনও) বলেন, ‘সাঙ্গু ট্রমা জেনারেল হাসপাতালে উদ্বোধনের পর অভিযান পরিচালনা করা হবে। আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট দেখাতে ব্যর্থ হলে সিলগালা করা হবে।’



সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন