মোংলা বন্দরের বেসক্রিকে অবস্থানরত ‘এমভি সেজুঁতি’ নামক বাণিজ্যিক জাহাজে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (২৬ মে) ভোর রাতে বন্দর চ্যানেলের (পশুর নদী) বেসক্রিক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় দেশীয় অস্ত্রের মুখে জাহাজের ক্রু ও স্টাফদের জিম্মি এবং মারধর করে বিয়ারিং, ইকুপমেন্ট, স্ক্রাপ ও ওয়াররোফসহ প্রায় ২২ লাখ টাকা মূল্যের বিভিন্ন মালামাল লুট করে নিয়েছে সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্র। এ সময় ডাকাত দলের মারধরে তিন ক্রু আহত হয়েছেন।
জাহাজটির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট আল সাফা শিপিং লাইন্সের খুলনাস্থ ম্যানেজার শরিফ জাহিদুল করিম অমিত জানান, বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান পিএনএন শিপিং লাইন্সের মালিকানাধীন এমভি সেজুঁতি ভারত থেকে পাথর বোঝাই করে গত বছরের ২২ জুন মোংলা সমুদ্র বন্দরের বেসক্রিক এলাকায় নোঙ্গর করে পণ্য খালাস কাজ সম্পন্ন করে।
বন্দরে অস্থানকালে হঠাৎ যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে জাহাজটি প্রায় এক বছর ধরে বন্দর চ্যানেলে আটকা রয়েছে। জাহাজটিতে চিফ অফিসারসহ ৭ ক্রু ও স্টাফ রয়েছেন।
তিনি বলেন, বন্দর চ্যানেলে থাকা জাহাজটিতে সোমাবার ভোর রাতে একটি ফিসিং ট্রলারে দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে হানা দেয় ১৪ জনের একটি ডাকাত দল। এ সময় নাবিকদের রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী তাণ্ডব চালায় ডাকাত দলের সদস্যরা। ডাকাতরা জাহাজের পণ্য খালাসে ব্যবহৃত গ্রাফস্ট, জাহাজ বাঁধার ওয়াররোফ রোফ, ইঞ্জিনে ব্যবহৃত বেয়ারিং, বিপুল পরিমাণ জ্বালানি তেল, মোবিল ও রসদসহ বিভিন্ন ধরনের মালমাল লুট করে নেয়।
এ ছাড়াও নাবিকদের ব্যবহৃত ৭টি মোবাইল ফোনও কেড়ে নেয় তারা। সশস্ত্র ডাকাতদের মারধরে জাহাজের ৩ স্টাফ আহত হন। তাদের শিপিং এজেন্টের সহায়তায় প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
শরিফ জাহিদুল করিম অমিত আরও জানান, মোংলা বন্দর চ্যানেলে থাকা জাহাজটিতে এ নিয়ে ৩ দফায় ডাকাতরা হানা দিয়ে লুটপাট চালায়। সর্বশেষ সোমবার ভোর রাতে জাহাজের প্রায় ২২ লাখ টাকার মালামার অস্ত্রের মুখে লুট করে ডাকাতরা।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ ও কোস্ট গার্ডসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা (ঢাকা) লেফট্যানেন্ট কমান্ডার হারুন অর রশীদ বলেন, কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোনের গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে লুণ্ঠিত মালমার উদ্ধার ও ডাকাত দলকে ধরতে অভিযান শুরু হয়েছে।
এদিকে, বন্দর চ্যানেলে থাকা বাণিজ্যিক জাহাজে ডাকাতির প্রসঙ্গে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক (বোর্ড ও জনসংযোগ বিভাগ) মো. মাকরুজ্জামান বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি, খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।’