বরগুনার আমতলীতে এক প্রতিবন্ধীর ভাতার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে নারী ইউপি সদস্য তামান্না বেগমের বিরুদ্ধে। তিনি উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের নারী ইউপি সদস্য। গত ৩ বছর ধরে প্রতিবন্ধীর পাওনা সবটাই আত্মসাৎ করলেন ওই নারী ইউপি সদস্য ও তার ভাই— এমনটাই অভিযোগ ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধী পরিবারের।
ভুক্তভোগী ওই প্রতিবন্ধী ব্যক্তির নাম দুলাল মিয়া। তিনি গুলিশাখালী ইউনিয়নের খেকুয়ানী এলাকার মৃত পবন গাজীর ছেলে। দুলাল মিয়া একজন বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। তার প্রতিবন্ধী কার্ড নম্বর ২৪১১৭৬৪৩১৫-৪০৬। ভাতা প্রাপ্তির মোবাইল নম্বর ০১৭৩১৮৭৭৮৪৩।
এই ঘটনায় গত শনিবার (২৯ অক্টোবর) আমতলী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন ভুক্তভোগী দুলাল মিয়া। আমতলী থানার সাধারণ ডায়েরি নম্বর ১২৪৬। সাধারণ ডায়েরিতে তিনি অভিযোগ করেন, গত ৩ বছর আগে সমাজসেবা কার্যালয় থেকে তিনি প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য পরিচয়পত্র পেয়েছেন। আবেদন করার সময় তার দেওয়া নম্বরে কোনো টাকা না আসায় আমতলী সমাজসেবা কার্যালয়ে খোঁজ নেন। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, ওই নম্বরের বিপরীতে অন্য নম্বর (০১৭৩৫০১৯০৬৯)-এ টাকা নিয়মিত উত্তোলন করে আসছে।
এ ঘটনায় ওই প্রতিবন্ধীর শ্বশুর জালাল ফরাজি জানান, “তিন বছর হয় আমার জামাই দুলাল প্রতিবন্ধী কার্ড পায়। কার্ডে দেওয়া মোবাইল নম্বরে টাকা না আসায় মহিলা মেম্বার তামান্নার নিকট জানতে চাইলে বলেন, ‘টাকা আইলে পাবি আনে, আমি তো তোদের টাকা মেরে খাই না।’ এরপর আমি অসুস্থ হয়ে পড়লে আর খোঁজখবর নেওয়া হয়নি। কয়েকদিন আগে খোঁজ নিলে জানতে পারি, আমার জামাইয়ের নামে টাকা বরাদ্দ হয়। তবে আমার জামাইয়ের কার্ডে দেওয়া নম্বরে না—তার পরিবর্তে মহিলা মেম্বারের ভাই কামালের নম্বরে টাকা উত্তোলন করা হয়।” জালাল ফরাজি আরও বলেন, গত ৩ বছরে ভাতার ২৬ হাজার ৪০০ টাকা সবই ওই নম্বর থেকে নিয়ে গেছে।
অভিযোগের বিষয়ে নারী ইউপি সদস্য তামান্না বেগমকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে অন্য একটি নম্বর থেকে ফোন দেওয়া হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে দ্রুত ফোন কেটে দেন।
থানায় জিডিতে উল্লেখ করা ভাতা আত্মসাৎ করা নম্বরটিতে ফোন করলে ট্রুকলারে দেখা যায় নম্বরের বিপরীতে নাম ওঠে শাহাবুল। তার কাছে পরিচয় জানতে চাইলে বলেন, তার বাবার নাম রুস্তম হাওলাদার, ঠিকানা নাজিরহাট বাউফল, পেশায় একজন শ্রমিক। তবে তার কথায় জড়তা ছিল। তিনি কিছুক্ষণ কথা বলার পর ফোন কেটে দেন। পরে আর তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
আমতলী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মঞ্জুরুল কাওসার বলেন, বিষয়টির তদন্ত চলছে। তদন্তপূর্বক আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রোকুনুজ্জামান খান বলেন, তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

