ঢাকা শনিবার, ১০ মে, ২০২৫

বন্ধুর নিমন্ত্রণে বাংলাদেশে এসে তরুণীর প্রেমে চীনা যুবক, ধুমধামে বিয়ে

ভোলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মে ৯, ২০২৫, ১২:৫৫ পিএম
ছবি-সংগৃহীত

অনলাইন বন্ধুর আমন্ত্রণে বাংলাদেশে আসেন এক চীনা যুবক। পরে বন্ধুর বোনের প্রেমে পড়েন। অবশেষে দুই পরিবারের সম্মতিতে ধুমধাম করে বিয়ে হয়েছে তাদের।

ভোলা সদর উপজেলার ভেলুমিয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের শরীফ খাঁ বাজার এলাকার বাদশা চেয়ারম্যান বাড়িতে চীনা ওই যুবকের সঙ্গে বাংলাদেশি মেয়ের বিয়ে হয়।

এ খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে জেলাজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। দূরদূরান্ত থেকে বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ চীনা জামাইকে দেখতে ছুটে আসছেন।

জানা গেছে, ভোলার মো. রনি নামে এক যুবকের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইউচ্যাটে পরিচয় হয় ইরিছা চং ওরফে মাওয়েন হুয়া নামে ওই চীনা যুবকের। রনির কাছে বাংলাদেশের অপরূপ সৌন্দর্যের কথা শুনে ঘুরতে আসেন তিনি।

মো. রনি জানান, ইরিছা চং ওরফে মাওয়েন হুয়া চীনের লুনজু শহরে মুসলিম পরিবারের সন্তান। তার বাবার নাম মেছউধা। তিনি ওই শহরের শহরের একটি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেন।

প্রায় দুই বছর আগে ইউচ্যাট নামে একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার সঙ্গে পরিচয় হয় ইরিছার। দীর্ঘদিন তিনি তার কাছে বাংলাদেশের বিষয়ে জানতে চান। বাংলাদেশের অপরূপ সৌন্দর্য তুলে ধরেন তিনি। একসময় ইরিছা বাংলাদেশে ঘুরতে আসার ব্যাপারে আগ্রহী হন। রনি তাকে ঘোরার জন্য সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

গত ১১ এপ্রিল চীন থেকে ঢাকায় আসেন ইরিছা। ঢাকায় কয়েক দিন ঘোরার পর তাকে তাদের গ্রামের বাড়িতে আসার জন্য আমন্ত্রণ করলে রাজি হন ইরিছাও। পর তাকে নিয়ে ১৬ এপ্রিল ভোলায় গ্রামের বাড়িতে আসেন।

রনি জানান, তাদের বাড়িতে কয়েক দিন থাকার পর তার ছোটবোন নাবিয়া আক্তারকে ভালো লাগে ইরিছার। নাবিয়াকে বিয়ে করার জন্য পরিবারকে প্রস্তাব দেন।

পরে উভয় পরিবারের সম্মতিতে গত ৪ মে ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে হয় তাদের। ১৫-২০ দিন পর তার বোনকে নিয়ে চীন ফিরে যাবেন ইরিছা। রনিও সঙ্গে যাবেন বলে জানান।

চীনা যুবক ইরিছা চং ওরফে মাওয়েন হুয়া জানন, তিনি বাংলাদেশে ঘুরতে এসেছিলেন। পরে বন্ধু রনির সঙ্গে তার গ্রামের বাড়িতে এসেছেন। তার কাছে গ্রামের পরিবেশ অনেক পছন্দ হয়েছে। এরপর নাবিয়াকে তার ভালো লাগতে শুরু করে। এপর্যায়ে তিনি নাবিয়ার প্রেমে পড়েন।

তিনি জানান, প্রথমে নাবিয়ার পরিবার বিয়েতে রাজি ছিল না। পরে দুই পরিবারই রাজি হয়েছে। এরপর ১০ লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে হয়।

ইরিছা বলেন, ‘আমি আশা করছি, স্ত্রী নাবিয়াকে সারাজীবন সুখে রাখতে পারব। যতদিন বাঁচব নাবিয়াকে নিয়েই বাঁচব।’

নাবিয়া আক্তার বলেন, ‘ইরিছা আমাকে পছন্দের বিষয়ে রনি ভাইয়ের কাছে বলেছেন। পরে রনি ভাই মা-বাবার কাছে বলেন। প্রথমে সবাই রাজি ছিল না। পরে তারা ইরিছার খোঁজখবর নেন। ইরিছা সত্যি মুসলিম কি না, সে ব্যাপারেও নিশ্চিত হন তারা। এরপর ইরিছার মা-বাবা ও পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে আমার পরিবার। একপর্যায়ে উভয় পরিবারের সম্মতিতে আমাদের বিয়ে হয়।

নাবিয়া জানান, তিনি এইচএসসি পাশ করার পর অনার্সে ভর্তির জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন। এখন যেহেতু বিদেশি ছেলের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে তাই সুযোগ হলে চীনে গিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাবেন।