সাইফুল্লা নামে ষাটোর্ধ এক কৃষকের ৮০ শতাংশ জমির পাকা ধান কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার মুজিবনগর ইউনিয়নের দুই প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এ ছাড়াও তারা ১৭০ শতাংশ জমির পাকা ধান কেটে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন।
অভিযুক্তরা হলেন- বাবলু হাওলাদার ও তার জামাতা জাফর বেপারি। তারা দুজনই মুজিবনগর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। ভুক্তভোগী কৃষকও একই এলাকায় বসবাস করেন।
কৃষক সাইফুল্লা জানান, তার ক্রয়কৃত ১৭০ শতাংশ জমির ধান কাটতে গেলে বাবলু হাওলাদার ও জাফর বেপারি শনিবার (৬ ডিসেম্বর) ভোরে বাধা দেন। এ ঘটনার ১০ দিন আগেও ওই কৃষকের একই মৌজার ৮০ শতাংশ জমির পাকা ধান কেটে নিয়েছিলেন এই শ্বশুর-জামাতা।
সাইফুল্লা বলেন, লালমোহন উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা অলিউল্লাহ মেলকার থেকে আমি চরমোতাহার মৌজার ৮৭৮নং খতিয়ানের ১৭০ শতাংশ জমি ১৩ বছর আগে ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকায় ক্রয় করি এবং ৯৩ হাজার টাকায় বায়নাচুক্তিতে চাষাবাদ করে আসছি। বর্তমানে তারা জমির দলিল না দিয়ে আমার ও আমার ছেলেদের হুমকি দিচ্ছে।
এ ছাড়াও একই মৌজার ১৫৫নং খতিয়ানের ৮০ শতাংশ জমির পাকা ধান দশ দিন আগে কেটে নিয়েছেন। এই জমির কোনো মালিকানা নেই বাবলু হাওলাদার ও জাফর বেপারির।
সাইফুল্লার চাষা নিরব বলেন, আমি ১৬০ শতাংশ জমি কৃষক সাইফুল্লার কাছ থেকে নগদ টাকায় কট (ইজারা) নিয়েছি। ওই জমি সাইফুল্লার চাচাতো ভাই আলমগীর মোল্লা মালিকানা দাবি করেন। যদিও দীর্ঘ বছর ধরে সাইফুল্লার দখলে রয়েছে।
বাবলু হাওলাদার আজ সকালে আমার মোবাইলে কল দিয়ে বলেছে, এই জমি নিয়ে ঝামেলা আছে, যতদিন এই ঝামেলা চলবে ততদিন আমাদের মারফত থাকবে।
আবার জাফর বেপারি বলেছে, তুই ধান আমাকে দিবি। সাইফুল্লার থেকে কটের টাকা উঠাইয়া নিও। বর্তমানে জাফর বেপারি আমার ধান আটকিয়ে রেখেছেন।
আরেক চাষি হারুন জানান, আমি ১৬০ শতাংশ জমি নগদ টাকায় কৃষক সাইফুল্লার কাছ থেকে কট (ইজারা) নিয়েছি। তবে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর জাফর বেপারি আমার কট নেওয়া জমির মধ্যে ৮ গোন্ডা (৬৪ শতাংশ) জমি দখল নেন। তিনি দাবি করেছেন যে, সাইফুল্লার কাছ থেকে জমি পাওনা রয়েছে।
অভিযুক্ত জাফর বেপারি বলেন, সাইফুল্লার সঙ্গে আমাদের ৫ গোন্ডা (৪০ শতাংশ) জমির বিরোধ রয়েছে। আওয়ামী লীগের সময় তারা আমাদের জমি জোর করে দখল করেছিল। ৫ আগস্টের পর ওই জমি আমরা দখল করেছি এবং আমাদের কাছে কাগজপত্র আছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে বাবলু হাওলাদারের মুঠোফোনে একাধিক কল দেওয়ার পরও তিনি রিসিভ না করায় মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
দুলারহাট থানার ওসি আরিফ ইফতেখার বলেন, এ বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


