ঢাকা বুধবার, ০৪ জুন, ২০২৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাহাড়ি ঢলে আকস্মিক বন্যা, ১৯ গ্রাম প্লাবিত

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২, ২০২৫, ১১:৫২ এএম
আকস্মিক বন্যায় ঘরবাড়ি ও দোকানপাটে পানি ঢুকে পড়েছে। ছবি- সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় টানা বর্ষণ ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে সীমান্তবর্তী নিম্নাঞ্চলে আকস্মিক বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। এতে উপজেলার মোগড়া, মনিয়ন্দ ও দক্ষিণ ইউনিয়নের অন্তত ১৯টি গ্রাম প্লাবিত হয়।

সোমবার (২ জুন) সকাল ৯টার পর থেকে আবারও বৃষ্টি শুরু হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। এ ঘটনায় রাতের অন্ধকারে অনেক পরিবারকে ঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে হয়েছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বঙ্গেরচর এলাকার সড়ক দিয়ে প্রবল পানির স্রোত প্রবাহিত হচ্ছে। ত্রিপুরা থেকে নেমে আসা পানি আশপাশের খাল-নালা উপচে ঘরবাড়ি ও দোকানপাটে ঢুকে পড়েছে। এতে ব্যবসাবাণিজ্য প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। তবে আখাউড়া স্থলবন্দরের কার্যক্রম এখনো সচল রয়েছে বলে জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। 

আখাউড়া স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান জানান, বন্যার কারণে বন্দর কার্যক্রমে কোনো বড় ব্যাঘাত ঘটেনি। সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ভারতে ৩টি ট্রাকে ১৫ টন মাছ রপ্তানি হয়েছে। একই সময়ে ৪০-৪৬ জন যাত্রী ভারত গেছেন। 

আখাউড়া উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বন্যাকবলিত ১৯টি গ্রামে প্রায় ৪৫০টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তাদের আশ্রয়ের জন্য ১১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিএম রাশেদুল ইসলাম বলেন, আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং পানিবন্দি মানুষদের সেখানে সরিয়ে আনা হচ্ছে। তাদের জন্য শুকনো খাবার সরবরাহের চেষ্টা চলছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর তালিকা প্রণয়ন করা হবে।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুর রহমান জানান, সোমবার সকালে ত্রিপুরা হাওরা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫২ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছিল এবং সেই পানি বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এ বন্যা এতটাই হঠাৎ করে এসেছে যে, অনেকেই প্রস্তুত হওয়ার আগেই ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে পড়ে। রাতেই ঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে হয়েছে। অনেকেই মালামাল রক্ষা করতে না পারায় বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ২৮ মে সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে উপজেলার মোগড়া, মনিয়ন্দ ও দক্ষিণ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। রোববার পর্যন্ত ১০টি গ্রাম প্লাবিত ছিল, যা সোমবার এসে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯টিতে। জনজীবন পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।