প্রায় দুইশত ত্রিশ বছর পূর্বে নির্মিত এক গম্বুজ বিশিষ্ট বড়িকান্দি ভূঁইয়া বাড়ি জামে মসজিদ এক প্রাচীন স্থাপত্যের নাম। দৃষ্টিনন্দনভাবে নির্মিত এ মসজিদটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বড়িকান্দি গ্রামে অবস্থিত। ১৭৯৫ সালে মসজিদটি নির্মাণ করেন বড়িকান্দি ভূঁইয়া বাড়ির প্রয়াত মো. আশিক ভূঁইয়া।
আনুমানিক ১০ শতক জায়গায় তৈরি মসজিদটির পশ্চিম পাশে রয়েছে বিশাল এক পুকুর। মসজিদের দক্ষিণে আছে ভূঁইয়া বাড়ি ঈদগাহ মাঠ আর উত্তরে রয়েছে মানিকনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
এছাড়া মসজিদটির বিশাল একটি গম্বুজ আকাশের দিকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আল্লাহর একত্ববাদের ঘোষণা দেয়। আযানের জন্য আলাদা তৈরি একটি সুবিশাল মিনার থেকে বাতাসে ভেসে আসা আজানের ধ্বনি মসজিদ চত্বরে এক সুমধুর পরিবেশ তৈরি করে।
মসজিদটির ভেতরের দেয়ালে কারুকাজে নানা রকম হালকা নকশা যা সবার নজর কাড়ে। মসজিদের ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, মূল মসজিদটির আকার খুবই ছোট। নির্মাণকালীন তিন কাতার মুসল্লি ধারণ ক্ষমতা রেখেই মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল। যেখানে ইমামসহ ২৫ জন মুসল্লী এবং বারান্দাসহ প্রায় শতাধিক মুসল্লী একসাথে এখানে নামাজ আদায় করতে পারে।
মসজিদটিতে দেখা মিলেছে সুবিশাল গভীর এক কুয়া। একটা সময় মুসল্লীরা নামাজের আগে এ কুয়া থেকে পানি তুলে অজু করতো, এমনকি আশেপাশের অনেক বাড়িঘরের মানুষও এ কুয়ার পানি তাদের নানা কাজে ব্যবহার করতো। তবে বর্তমানে কুয়াটি ব্যবহার করা হয়না, এটি সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে।
স্থানীয় মুসুল্লিরা জানান, ইতিহাস, ঐতিহ্যের ধারাকে লালন করে দাঁড়িয়ে আছে দৃষ্টিনন্দন প্রাচীন বড়িকান্দি ভূঁইয়া বাড়ি জামে মসজিদ। যার সৌন্দর্য দেখার জন্য এখনো দূর-দূরান্ত থেকে বহু দর্শনার্থী ভীড় জমায়।
তারা বলেন, আমাদের পূর্বপুরুষেরা এই মসজিদে নামাজ আদায় করেছেন, বর্তমানে আমরাও নামাজ আদায় করছি, মসজিদটি সরকারি উদ্যোগে সংস্কার করে সংরক্ষণ করা গেলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এ মসজিদে নামাজ আদায় করতে পারবে।
বড়িকান্দি ভূঁইয়া বাড়ি জামে মসজিদের নেতৃবৃন্দরা বলেন, এই মসজিদটি আমাদের গ্রামের ঐতিহ্য, আমাদের গর্বের বিষয়। আমরা চাই মসজিদটি সংস্কার করে সংরক্ষণ করা হোক। তাই তারা পুরনো এই মসজিদটির স্মৃতি ধরে রাখার জন্য মসজিদটি সংস্কার করে সংরক্ষণের জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান।

