ওমানের ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত আট প্রবাসীর মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে। নিহত আটজনের মধ্যে সাতজনের বাড়িই সন্দ্বীপে। তাদের মধ্যে পাঁচজনের বাড়ি সারিকাইত ইউনিয়নে।
বাকি দুজনের একজনের বাড়ি মাইটভাঙ্গায়, অপরজনের সন্দ্বীপ পৌরসভার রহমতপুর এলাকায়। নিহতদের মধ্যে রাউজানের এক প্রবাসীও রয়েছেন। এ দুর্ঘটনায় একমাত্র জীবিত ব্যক্তি গাড়িচালক ছগির বর্তমানে ওমানের দুখুম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনিই ভিডিওকলে ঘটনাস্থলে আটজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
ছগির জানান, সিদরা থেকে সাগরমুখী একটি মাছবাহী বড় ট্রাক বেপরোয়া গতিতে এসে তাদের গাড়িতে ধাক্কা দিলে ভয়াবহ দুর্ঘটনাটি ঘটে।
নিহতদের মধ্যে সারিকাইতের ২ নম্বর ওয়ার্ডের শাহাবুদ্দীন, বাবলু ও রকি- একই সমাজের মানুষ ছিলেন। তিনটি পরিবারই এখন শোকে স্তব্ধ। শাহাবুদ্দীনের চার মাস বয়সি শিশু আছিয়া বাবাকে একবারও ‘বাবা’ বলতে পারল না। মাত্র ২১ দিন আগে ছুটি শেষে ওমানে ফেরত যান তিনি। বাবলুর দুই সন্তান, রকির পাঁচ মাসের একমাত্র ছেলে- সবাই এখন পিতৃহীন।
রহমতপুরের রনির বাড়িতেও চলছে শোকের মাতম। একের পর এক পরিবারের মৃত্যু যেন সহ্যসীমার বাইরে চলে গেছে। এবার দেড় বছরের সন্তান ও স্ত্রীকে রেখে চিরবিদায় নিলেন রনি।
মাইটভাঙ্গার জুয়েল ছয় বছর ধরে ওমানে কর্মরত ছিলেন। সম্প্রতি বাড়িতে এসে পাকা ঘর তৈরির কাজ শুরু করেছিলেন।
তার বাবা বলেন, আগামী সপ্তাহে ছাদের কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। ঘর তো হবে, কিন্তু সে ঘরে থাকবে কে?
সারিকাইত ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তাসলিমা বেগম জানান, প্রবাসে একসঙ্গে এতজনের মৃত্যুতে সারিকাইতসহ পুরো সন্দ্বীপ শোকে নিস্তব্ধ হয়ে গেছে।
ওমানে কর্মরত প্রবাসী শরীফুল ইসলাম জানান, নিহতদের মরদেহ দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে এবং দূতাবাস সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।
সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মংচিংনু মারমা বলেন, নিহতদের দাফন-কাফনের বিষয়ে সরকারিভাবে প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতা করা হবে।
এদিকে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির নেতা প্রকৌশলী বেলায়েত হোসেন, উপজেলা আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আবু তাহের ও জামায়াত নেতা আলাউদ্দীন সিকদার নিহত রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে সরকার ও বিত্তবানদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন