বৈরী আবহাওয়ার কারণে টানা ছয় দিন কক্সবাজারের টেকনাফ–সেন্ট মার্টিন নৌপথে যাত্রী ও পণ্যবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ থাকায় মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে দ্বীপটির যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ফলে দ্বীপজুড়ে খাদ্য, জ্বালানি, কাঁচামাল ও ওষুধের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন গত ২৫ মে থেকে নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ফলে দ্বীপে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান, সেন্ট মার্টিনে কোনো স্থায়ী গুদাম না থাকায় প্রতিদিন টেকনাফ থেকে পণ্য সরবরাহ করতে হয়। তাই নৌ যোগাযোগ বন্ধ থাকলে সংকট দ্রুত প্রকট হয়।
সেন্ট মার্টিনের দক্ষিণপাড়া, পশ্চিমপাড়া ও গলাচিপা এলাকাগুলো বর্তমানে জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত। এ অবস্থায় জ্বালানির অভাবে জেনারেটর বন্ধ থাকায় বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন। সূর্যের আলো না থাকায় সোলার প্যানেলের বিদ্যুৎ সরবরাহও বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল মালেক বলেন, ‘দ্বীপে এখন কাঁচা তরকারি, চাল, ডাল, জ্বালানি ও ওষুধ কিছুই নেই। দিনের পর দিন বিদ্যুৎহীন অবস্থায় থাকতে হচ্ছে। এভাবে আর কতদিন চলবে জানি না।’
আরেক বাসিন্দা জসিম উদ্দিন শুভ জানান, ‘বাজারে দোকান বন্ধ। খাবার প্রায় শেষ। বিদ্যুৎ নেই, মোবাইলও চার্জ দেওয়া যাচ্ছে না। আমরা কঠিন সময় পার করছি।’
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দীন জানান, ‘আজ পণ্যবাহী সার্ভিস বোট সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। এক হাজার মানুষের জন্য জরুরি খাদ্যসামগ্রী পাঠানো হয়েছে। বিকেলের মধ্যে বোট পৌঁছে যাবে বলে আশা করছি।
তিনি আরও জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে পর্যায়ক্রমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। তবে নিরাপত্তা ও যাত্রী নিরাপত্তার বিষয়টি অগ্রাধিকার দিয়ে নৌ চলাচল অনুমোদন দেওয়া হবে।
দ্রুত নৌ যোগাযোগ না চালু হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের। দ্বীপবাসীর জীবনযাত্রা রক্ষায় জরুরি ভিত্তিতে অবকাঠামোগত ব্যবস্থা ও টেকসই গুদাম স্থাপনের দাবিও উঠে এসেছে।