বুধবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৯, ২০২৫, ০৮:৪৮ পিএম

১ নভেম্বর থেকে পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে সেন্টমার্টিন

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৯, ২০২৫, ০৮:৪৮ পিএম

প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন। ছবি- সংগৃহীত

প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন। ছবি- সংগৃহীত

বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ ও পর্যটন কেন্দ্র সেন্টমার্টিন ১ নভেম্বর থেকে পর্যটকদের জন্য পুনরায় উন্মুক্ত করা হচ্ছে। পর্যটকদের সুবিধার্থে দ্বীপটিতে ইতোমধ্যেই নানা ধরনের প্রস্তুতি চলছে। তবে গত বছরের মতো এবারও পর্যটকদেরকে সরকারের নির্ধারিত ১২টি কড়া নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বাসসকে জানান, ১ নভেম্বর থেকে সেন্টমার্টিনে পর্যটক যাতায়াত শুরু হবে। তিনি আরও বলেন, প্রাকৃতিক ভারসাম্য, জীববৈচিত্র্য ও দ্বীপের সৌন্দর্য সংরক্ষণের জন্য পর্যটকদের কড়া নিয়ম মেনে চলা বাধ্যতামূলক। তাই জেলা প্রশাসন এবার সরকারের নির্ধারিত ১২টি নির্দেশনা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে।

আগে টেকনাফ ঘাট থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এবার কক্সবাজার শহরের বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে জাহাজ সেন্টমার্টিনের দিকে যাত্রা শুরু করবে। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের উপ-পরিচালক মহিবুল ইসলাম জানান, সেন্টমার্টিনে যাতায়াতের জন্য পর্যটকদের শুধুমাত্র বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে টিকিট ক্রয় করতে হবে। প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস এবং কিউআর কোড সংযুক্ত থাকবে। কিউআর কোড ছাড়া টিকিট নকল হিসেবে গণ্য হবে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের সূত্রে জানা গেছে, সেন্টমার্টিনে প্রতিবছরের মতো এবারও পর্যটকবাহী জাহাজ কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়ার বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে চলাচল করবে। আইনগত বিধিনিষেধ থাকায় উখিয়ার ইনানী ঘাট থেকে সেন্টমার্টিনে সরাসরি যাতায়াত বন্ধ থাকবে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, দ্বীপের অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ রক্ষার জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে এবং তা অব্যাহত থাকবে।

সেন্টমার্টিন দ্বীপে ১,০৭৬ প্রজাতির জীববৈচিত্র্য রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে প্রবাল, শৈবাল, কাছিম, শামুক, ঝিনুক, সামুদ্রিক মাছ, পাখি, স্তন্যপায়ী প্রাণী ও কাঁকড়া। অতীতে অনিয়ন্ত্রিত অবকাঠামো নির্মাণ, বিপুল পর্যটকের সমাগম ও পরিবেশ দূষণের কারণে দ্বীপটি সংকটাপন্ন হয়েছিল। তবে গত ৯ মাসে পর্যটকবাহী যাতায়াত বন্ধ থাকায় দ্বীপের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নতি লাভ করেছে।

পরিবেশবিষয়ক সংগঠন ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি (YES), কক্সবাজারের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক জানান, পর্যটক সীমিত করার ফলে সৈকতে লাল কাঁকড়া, শামুক ও ঝিনুকের বংশবিস্তার ঘটেছে এবং মা কাছিমের ডিম পাড়ার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়েছে।

নিয়ম অনুযায়ী, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া কোনো নৌযান সেন্টমার্টিন দ্বীপে চলাচল করতে পারবে না।

নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী

  • পর্যটকরা বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে টিকিট ক্রয় করবেন।
  • প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড থাকতে হবে।
  • নভেম্বর মাসে পর্যটকরা শুধুমাত্র দিনের বেলা দ্বীপে ভ্রমণ করতে পারবেন, রাত্রিযাপন নিষিদ্ধ।
  • ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে রাত্রিযাপন অনুমোদিত। ফেব্রুয়ারিতে দ্বীপে পর্যটক যাতায়াত সম্পূর্ণ বন্ধ।
  • প্রতিদিন গড়ে ২,০০০-এর বেশি পর্যটক দ্বীপে প্রবেশ করতে পারবেন না।
  • সৈকতে রাতের আলো, শব্দ বা বারবিকিউ পার্টি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
  • প্রবাল, কাছিম, শামুক-ঝিনুক, রাজকাঁকড়া, পাখি ও অন্যান্য জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
  • মোটরচালিত যানবাহন (মোটরসাইকেল, সি-বাইক) দ্বীপে চলাচল করতে পারবে না।
  • নিষিদ্ধ পলিথিন ও একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক বহন নিষিদ্ধ। পর্যটকদের নিজস্ব পানির ফ্লাস্ক সঙ্গে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এই নতুন নিয়ম-কানুন কার্যকর করার মাধ্যমে সেন্টমার্টিন দ্বীপের নাজুক পরিবেশ ও অনন্য জীববৈচিত্র্য সংরক্ষিত থাকবে। সরকার আশা করছে, দ্বীপটি দায়িত্বশীল ও পরিবেশবান্ধব পর্যটনের এক উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।

Link copied!