কুমিল্লার মুরাদনগরের বাঙ্গরাবাজার থানার কড়ইবাড়ি এলাকায় মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডে নিহত হয়েছেন একই পরিবারের তিনজন—মা, ছেলে ও মেয়ে। এর আগেই নিখোঁজ হন ওই এলাকার বাসিন্দা বোরহান উদ্দিন (২৮)। তবে পুলিশ জানিয়েছে, তিনি ঢাকায় আছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১ জুলাই মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগে বোরহান উদ্দিনকে গণপিটুনি দেওয়া হয়। এরপর থেকেই তিনি নিখোঁজ। পরদিন গত ২ জুলাই তার বাবা জসিম উদ্দিন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন, যেখানে ছেলেকে মারধর করে অপহরণের অভিযোগ তোলা হয়।
বাঙ্গরাবাজার থানার ওসি মাহফুজুর রহমান জানান, বোরহানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে তাদের কথা হয়েছে। তিনি বর্তমানে ঢাকায় রয়েছেন।
তবে বোরহানের অবস্থান নির্দিষ্ট করে কিছু জানাননি। তার বাবা জসিম উদ্দিনও বর্তমানে কুমিল্লায় আছেন বলে জানান তিনি।
বোরহানের খোঁজে স্থানীয়রা তাদের বাড়িতে গেলেও কাউকে পাওয়া যায়নি। বোরহানের ছোট বোন আমরিন আক্তার বলেন,‘বাবা ও ভাইয়ের সঙ্গে কয়েকদিন ধরে কোনো যোগাযোগ নেই। তারা কোথায় আছেন জানি না।’ বর্তমানে বাড়িতে কেবল তার দাদা-দাদি অবস্থান করছেন।
এর আগে গত ৪ জুলাই সকালে কড়ইবাড়ি এলাকায় মাদক কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে রোকসানা বেগম রুবি (৫৩), তার ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫) এবং মেয়ে জোনাকি আক্তার (২৯)-কে স্থানীয়রা পিটিয়ে হত্যা করে। ঘটনায় গুরুতর আহত হন রুবির মেয়ে রুমা আক্তার, যিনি বর্তমানে ঢাকায় চিকিৎসাধীন।
নিহত রুবির মেয়ে রিক্তা আক্তার ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২৫ জনকে আসামি করে বাঙ্গরাবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
রিক্তা বলেন, ‘বোরহানকে যখন মারছিল, তখন তার বাবা আমার মায়ের সাহায্য চান। মা বোরহানকে ছাড়াতে গেলে বিবাদ বাঁধে।’
বোরহানকে মারধরের ঘটনায় যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছিল, তাদের অনেকেই রুবি ও তার সন্তানদের হত্যা মামলারও আসামি। পুলিশ এ মামলায় আটজনকে গ্রেপ্তার করে প্রত্যেকের সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেছে।
জোনাকির স্বামী আলমগীর হোসেন মনির বলেন, ‘বোরহান কোথায় আছে জানি না। ঘটনার পর থেকেই তারা আর এলাকায় আসেনি। হয়তো ভয়ে লুকিয়ে আছে।’
এই হত্যাকাণ্ড ও নিখোঁজের ঘটনার জেরে কড়ইবাড়ি এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে।