ফরিদপুরের সালথা উপজেলার মাঠে এখন সোনালি ধানের হাসি। শস্যশ্যামল মাঠজুড়ে শুরু হয়েছে আমন ধান কাটার উৎসব। কাস্তে হাতে কৃষক, মাড়াইযন্ত্রের শব্দ আর ধানের গন্ধে মুখরিত পুরো গ্রামাঞ্চল। কেউ মেশিনে, কেউ-বা হাতে ধান কাটছেন—তাতে গ্রামীণ জনপদে যেন উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন ধান কাটা, শুকানো ও মাড়াইয়ের কাজে। মাঠে গরুর খাবার খড়েরও চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় কৃষকরা ভালো দাম পাচ্ছেন। চাষাবাদে সার, কীটনাশক ও শ্রমিক সংকটসহ কিছু প্রতিবন্ধকতা থাকলেও ফলন ভালো হওয়ায় তাদের মুখে তৃপ্তির হাসি।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে বাজারে প্রতি মন ধান বিক্রি হচ্ছে ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকায়। আগাম ফসল কেটে কৃষকরা পেঁয়াজ চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কৃষি শ্রমিকরাও এ সময়ে কাজ পেয়ে সন্তুষ্ট। তাদের প্রত্যাশা, ভালো দাম ও সরকারিভাবে সহায়তা পেলে ভবিষ্যতে আমন ধান চাষে আরও আগ্রহী হবেন।
সালথা উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১২ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে।
ভাওয়াল গ্রামের কৃষক ময়নদ্দীন মাতুব্বর বলেন, ‘আমন ধানের ফলন এবার ভালো হয়েছে। দামও ভালো পাচ্ছি। এই ধান বিক্রির টাকায় পেঁয়াজ আবাদ শুরু করব।’
উপজেলার পুরুরা গ্রামের কৃষক সিরাজ মোল্লা বলেন, আগে কাজের অভাবে সংসারে কষ্ট চলছিল। এখন ধান কাটার কাজ পেয়ে অভাব অনেকটাই কেটে গেছে।
সালথা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুদর্শন শিকদার বলেন, এবার আমন ধানের ফলন আশানুরূপ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় উৎপাদনও বেশি। কৃষকরা ভালো দাম পাচ্ছেন, ফলে তারা আরও উৎসাহী হচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, উপজেলায় স্বল্পবয়সী জাতের আমন ধান আগাম কাটা শুরু হয়েছে। এতে একই জমিতে দ্রুত পেঁয়াজ চাষের সুযোগ তৈরি হচ্ছে। উৎপাদন বৃদ্ধি ও দুই ফসলি জমিকে তিন ফসলিতে রূপান্তর করতে কৃষি বিভাগ মাঠপর্যায়ে কৃষকদের পাশে কাজ করছে।


