ফেনীতে পৃথক তিনটি স্থানে অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কর্মীরা কেরোসিন, পেট্রোল ও গ্যাস লাইট নিয়ে গাড়িতে আগুন দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়ার সময় নয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে ফেনী মডেল থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে, গত রোববার রাতে সদর উপজেলার লালপুল, লেমুয়া ও মহিপাল এলাকায় এসব অভিযান চালানো হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, সোমবার জুলাই হত্যা মামলার আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের রায়কে কেন্দ্র করে সংগঠনটি সারা দেশে শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার রাত সাড়ে ১টার দিকে শহরতলী লালপুল এলাকায় এ রায়কে কেন্দ্র করে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কর্মীরা কেরোসিন, পেট্রোল ও গ্যাস লাইট নিয়ে সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িগুলোতে আগুন লাগানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এ সময় দু’জনকে আটক করা হয়।
আটক ব্যক্তিরা হলেন- সোনাগাজী উপজেলার কুঠিরহাট এলাকার ইউসুফের ছেলে আবদুল্লাহ আল মাসুম (২২) এবং একই উপজেলার বিষ্ণুপুর এলাকার নাছির উদ্দিনের ছেলে মো. রাজু (২০)। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, প্রবাসী রাজু নামে এক ব্যক্তির নির্দেশে তারা লালপুলে গাড়িতে আগুন দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা আলাউদ্দিন নাছিমের পক্ষে স্লোগান দিয়ে ভিডিও করে তার কাছে পাঠাতে বলা হয়। এর বিনিময়ে যা চাইবে, তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের লেমুয়া এলাকায় নাশকতা ও মিছিলের প্রস্তুতির খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালায়। এ সময় তিনজনকে আটক করা হয়। বাকিরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়।
আটক ব্যক্তিরা হলেন- লেমুয়া ইউনিয়নের নেওয়াজপুর গ্রামের নুরুল আমিনের ছেলে রাকিবুল ইসলাম (২১), নুর করিমের ছেলে মো. নাহিদ (২২) এবং মমিনুল হকের ছেলে মো. আশরাফুল হক (২১)। তারা জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, বর্তমানে তারা নিষিদ্ধ সংগঠনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িত।
অন্যদিকে, মহিপাল এলাকায় রোববার রাত ২টার দিকে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখে চারজনকে আটক করা হয়। বাকিরা পুলিশ টের পেয়ে পালিয়ে যায়।
আটক ব্যক্তিরা হলেন- ঢাকার লালবাগ থানার আনোয়ারের ছেলে মো. জিসান (১৯), একই থানার আনোয়ার হোসেনের ছেলে ফারদিন ইসলাম (১৮), মৃত আনোয়ার হোসেনের ছেলে মো. সোহেল (১৮) এবং সাইফুলের ছেলে সিরাম (১৮)।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, দাগনভূইঁয়া উপজেলার ইমন নামে এক ব্যক্তি তাদের মহিপালে জড়ো হতে বলে। তারা সেখানে ইমনের জন্য অপেক্ষা করছিল। ইমনের নেতৃত্বে নাশকতার প্রস্তুতি চলছিল। পুলিশ আটকের বিষয় জানার পর ইমন ফোন বন্ধ করে দেয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, তাদের বিরুদ্ধে সরকারবিরোধী অপরাধ আইনে মামলা করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) নিশাত তাবাসসুম এবং ফেনী মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ শামসুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।


-20251117214532.webp)

