ঢাকা শনিবার, ০৮ নভেম্বর, ২০২৫

অল্প খরচে বেশি লাভ, পানিফল চাষে সফল কৃষকরা

মহসিন রেজা রুমেল, দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ৮, ২০২৫, ০১:৩৪ পিএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে পতিত জলমগ্ন জমিতে পানিফল চাষ করে কৃষকরা ব্যাপক লাভবান হচ্ছেন। নদী বেষ্টিত এই উপজেলায় কম-বেশি প্রায় সব এলাকায় পানিফল চাষ হয়। অধিক চাষের কারণে প্রতিদিন দেওয়ানগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনের পাশে পানিফলের হাট বসে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকাররা এখানে এসে পানিফল ক্রয় করেন। হাটের ইজারাদারের দাবি, প্রতিদিন ৮–১০ টন পানিফল বিক্রি হয়।

দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় ৩৯ হেক্টর পতিত জলমগ্ন জমিতে পানিফলের চাষ হয়েছে। দিন দিন এ চাষের জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে।

পৌর এলাকার পানিফল চাষি আলতাফ হোসেন বলেন, “এ বছর চার বিঘা জমিতে চাষ করেছি। ৭ হাজার টাকা খরচ করে ৩৫ হাজার টাকার পানিফল বিক্রি করেছি। আরও ২৫–২৬ মণ পানিফল ক্ষেতে আছে, যা বিক্রি করলে আরও ৩৫ হাজার টাকা আয় হবে।”

বালুগ্রামের ফরহাদ হোসেন বলেন, “অন্যান্য ফসলের তুলনায় পানিফল চাষে কম সার ব্যবহার করতে হয়। প্রতি বিঘায় ২০ কেজি ইউরিয়া সার প্রয়োজন। পোকার আক্রমণ হলে সামান্য বিষ প্রয়োগ করতে হয়। তাই খরচ কম হলেও লাভ বেশি।”

চাষি বিশু ডিলার জানান, “বর্ষার সময় পতিত নিচু জমি, ঢোবা ও জলাশয়ে অল্প খরচে পানিফল চাষ করা যায়। আমার ১০ বিঘা জমিতে চাষ করা পানিফল থেকে প্রতি বিঘা ১৫–১৬ মণ ফল উৎপাদন হয়। প্রায় ১৫ বছর ধরে চাষ করছি, কখনো লোকসান হয়নি।”

পানিফল বিক্রেতা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “দেওয়ানগঞ্জ থেকে পানিফল সংগ্রহ করে জামালপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা ও অন্যান্য এলাকায় বিক্রি করি। খুচরা বাজারে পাঁকা পানিফল ৩০ টাকা ও কাঁচা পানিফল ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।”

হাটের ইজারাদার মনির হোসেন জানান, “এ হাট অক্টোবরের শুরুর দিকে শুরু হয় এবং ডিসেম্বর শেষ পর্যন্ত চলবে। জামালপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা, গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামের শতাধিক পাইকার এখানে আসে।”

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রতন মিয়া বলেন, “পতিত জলমগ্ন জমি, খাল, ডোবা ও পুকুরে পানিফল চাষ করা যায়। আমাদের অফিস চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়। কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় দিন দিন পানিফল চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।”