ঢাকা শনিবার, ২১ জুন, ২০২৫

স্ত্রীর কিডনিতে নতুন জীবন ফিরে পেলেন বিএনপি নেতা

বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুন ২১, ২০২৫, ১০:১৭ এএম
চিকিৎসা শেষে শুক্রবার বিকেল ৪টার সময় হেলিকপ্টার করে কুদ্দুস বিশ্বাস নিজ এলাকায় ফিরে আসেন। ছবি- সংগৃহীত

দীর্ঘদিন কিডনি রোগে ভুগছিলেন যশোরের শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়া এলাকার ব্যবসায়ী ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কুদ্দুস বিশ্বাস (৫০)। অবশেষে স্ত্রী ফারজানার (৩০) দান করা কিডনিতেই নতুন জীবন ফিরে পেলেন তিনি।

চিকিৎসকদের মতে, জীবন রক্ষার একমাত্র উপায় ছিল কিডনি প্রতিস্থাপন। সংকটময় এই সময়ে স্ত্রী ফারজানা নিজের একটি কিডনি স্বেচ্ছায় দান করার সাহসী ও মানবিক সিদ্ধান্ত নেন। প্রয়োজনীয় সব পরীক্ষা-নিরীক্ষায় উপযুক্ত মিল পাওয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে তুর্কিস্তানে পাঠানো হয়। সেখানে বিশেষায়িত এক হাসপাতালে সফলভাবে কিডনি প্রতিস্থাপন সম্পন্ন হয়।

দীর্ঘ চার মাসের চিকিৎসা শেষে শুক্রবার (২০ জুন) বিকেল ৪টার দিকে হেলিকপ্টারে করে নিজ এলাকায় ফেরেন কুদ্দুস বিশ্বাস।

যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের পাশে বাগআঁচড়া জনতা ইকোপার্ক মাঠে হেলিকপ্টার অবতরণ করলে পুরো এলাকা উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। হাজারো মানুষ রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ফুল-মিষ্টি, ব্যানার ও শুভেচ্ছা বার্তা দিয়ে তাকে বরণ করে নেন।

শার্শা উপজেলার সাবেক এমপি মো. মফিকুল হাসান তৃপ্তি বলেন, এটা শুধু চিকিৎসার সাফল্য নয়, ভালোবাসা, আত্মত্যাগ আর মানবিকতার এক অনন্য উদাহরণ। ফারজানা শুধু একজন স্ত্রী নন, একজন সাহসী নারীও।

ফারজানা খাতুন বলেন, স্বামী যখন কিডনি রোগে আক্রান্ত হন, তখন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি আমার নিজের কিডনি দিয়ে হলেও তাকে সুস্থ করে তুলব। আমার একটাই কথা- স্বামী-স্ত্রী এক সাথে বাঁচব। বাকিটা জীবন যেন আমরা এক সাথে হাসি আনন্দে কাটাতে পারি।

কুদ্দুস বিশ্বাস বলেন, আমার জীবনের সংকটময় মুহূর্তে আমার স্ত্রী তার নিজের কিডনি দিয়ে এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে। আমি তার কাছে ঋণী হয়ে গেলাম। যে ঋণ কোনো দিন শোধ করতে পারব না। আমার স্ত্রীর জন্য সবাই দোয়া করবেন। আমি যেন ভালোবাসা দিয়ে তার এই ত্যাগের প্রতিদান দিতে পারি।

এলাকাবাসীর মুখে এখন একটাই কথা-ভালোবাসা বেঁচে আছে, ফারজানার মতো মানুষদের মাধ্যমে।