বুধবার, ০১ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


যশোর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ১, ২০২৫, ০৩:২৫ পিএম

দম্পতির প্রতারণায় স্বপ্ন ভাঙল ৪৪ পরিবারের

যশোর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ১, ২০২৫, ০৩:২৫ পিএম

প্রতারক দম্পতি মিন্টু ও তার স্ত্রী বৃষ্টি।  ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

প্রতারক দম্পতি মিন্টু ও তার স্ত্রী বৃষ্টি। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

কানাডায় পাঠানোর প্রলোভনে যশোরের চারজনের কাছ থেকে ৫৮ লাখ টাকা হাতিয়ে এক দম্পতি লাপাত্তা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

তারা ওই দম্পতির বিরুদ্ধে যশোর ও নাটোর সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। এর আগে পর্তুগাল পাঠানোর নামে আরও ৪০ জনের কাছ থেকে কোটি কোটি হাতিয়ে নেয় মিজানুর রহমান মিন্টু ও বৃষ্টি খাতুন। প্রতারক দম্পতির কবলে পড়ে ৪৪ পরিবারের স্বপ্ন ভেঙেছে। নিঃস্ব হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ভুক্তভোগীরা। অভিযুক্ত মিজানুর রহমান মিন্টু যশোর শহরের চাচড়া চোরমারা দীঘিরপাড় এলাকার আবুল কালামের ছেলে। টাকা হাতিয়ে মিন্টু ও তার স্ত্রী বৃষ্টি নাটোরে আস্তানা গেড়েছে।

জানা গেছে, যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের টেলি কমিউনিকেশন বিভাগ থেকে ডিপ্লোমা পাস করেন বাঘারপাড়া উপজেলার হাবুলগ্রামের নাজমুল হক মুন্নুর ছেলে নাঈমুল হক নাবিল (২৩)। উন্নত জীবনের আশায় কানাডায় পাড়ি জমাতে চেয়েছিলেন।

তার দাবি, ভিসা–প্রক্রিয়ার জন্য মায়ের জমি বিক্রি ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা থেকে নেয়া ঋণের মোট ১৫ লাখ টাকা তুলে দেন মিন্টুর হাতে। মিন্টু সেই টাকা নিয়ে যশোরের কার্যালয় গুটিয়ে নাটোরে গিয়ে নতুন কার্যালয় খুলেছেন। এখন পাসপোর্ট-ভিসাও দিচ্ছেন না, টাকাও ফেরত দিচ্ছেন না। এ ঘটনায় গত ২৭ সেপ্টেম্বর যশোরের কোতয়ালি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তার ভগ্নিপতি শেখ হাসানুর রহমান।

থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) তাহমুদুল ইসলাম জানান, ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে মামলার কাগজ হাতে পেয়েছেন। তদন্ত করে আইনানুগ  ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অভিযোগকারীদের আরেকজন যশোর সদর উপজেলার সিরাজসিংহা গ্রামের ওয়াজেদ আলীর ছেলে বাবলুর রহমান। তিনি মিন্টুর বিরুদ্ধে গত ১৮ সেপ্টেম্বর নাটোর সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ‘বৈধ পথে শ্রমিক ভিসায় কানাডায় পাঠাতে আমাদের চারজনের কাছ থেকে মোট ৫৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে যশোর থেকে পালিয়ে নাটোর সদর উপজেলার বড় হরিশপুর এলাকায় ইউরো ভিসা হেল্প সেন্টার বিডি নামের একটি নতুন অফিস খুলেছেন মিজানুর রহমান মিন্টু। ওই টাকা ফেরত চাইলে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন।

ভুক্তভোগী অন্য দুইজন হলেন ঝিকরগাছা উপজেলার নিশ্চিতপুর গ্রামের সাদেক আলীর ছেলে রাসেল কবির ও মণিরামপুর উপজেলার জামজামী গ্রামের মেহেদী হাসান।

বাবলুর রহমানের অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা নাটোর সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জামাল উদ্দিন জানান, প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছেন, মিজানুর রহমান দেশের বিভিন্ন জেলায় গিয়ে বিদেশে শ্রমিক পাঠানোর নামে অফিস খোলেন। এরপর ২০ থেকে ৫০ লাখ টাকা করে হাতিয়ে লাপাত্তা হন। কিছুদিন পর আরেক জেলায় গিয়ে নতুন অফিস খোলেন। যশোরেও তিনি একই কাজ করেছেন। নাটোরের একটি বাড়িতে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে তিনি অফিস করেছেন। ওই বাড়ির মালিকের সাথে কথা বলে জানতে পেরেছেন, দিনের বেলায় অফিসটি বন্ধ থাকে। রাতে দুই থেকে তিন ঘন্টার জন্য অফিস খোলা হয়।

জামাল উদ্দিন আরও জানান, মিজানুর বর্তমানে গা ঢাকা দিয়েছেন। তার স্ত্রী বৃষ্টিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়। তিনি (বৃষ্টি) জানিয়েছেন কানাডায় পাঠানোর জন্য ৪ জনের কাছ থেকে যে টাকা নেয়া হয়েছে, এর মধ্যে চেকের মাধ্যমে ২০ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। তদন্ত কার্যক্রম শেষ হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে, বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, মিন্টু-বৃষ্টি দম্পতির নেতৃত্ব একটি চক্র রয়েছে। তার কানাডা, পুর্তুগালসহ বিভিন্ন দেশে মানুষ পাঠানোর প্রলোভনে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। যশোর, নাটোরসহ কয়েকটি জেলায় তারা প্রতারণা কার্যক্রম ছিল৷ নাঈমুল হক নাবিল, রাসেল কবির, বাবলুর রহমান ও মেহেদী হাসানের কাছ থেকে ৫৮ লাখ টাকা হাতানোর আগে আরও ৪০ জনের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল মিন্টু-বৃষ্টি দম্পতি চক্র। ভুক্তভোগীদের কারও কারও ভুয়া ভিসা দিয়েও প্রতারণা করা হয়েছে। পুলিশের তদন্তেও এমন তথ্য মিলেছে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে।

এই বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য মিজানুর রহমান মিন্টুর ফোনে কল দিলে বন্ধ পাওয়া যায়।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!