ঢাকা রবিবার, ০৫ অক্টোবর, ২০২৫

সবজি চাষিদের স্বপ্ন ভাঙল টানা বৃষ্টি

যশোর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ৫, ২০২৫, ০৩:৩৫ পিএম
টানা বৃষ্টিতে ক্ষতির মুখে যশোরের সবজি উৎপাদন। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

সবজির রাজ্য হিসেবে পরিচিত যশোর। এখানে উৎপাদিত সবজির দেশ-বিদেশে সুনাম রয়েছে। চলতি মৌসুমে বৃষ্টিপাতের কারণে সবজি ক্ষেত ও বীজতলা নষ্ট হয়েছে। চাষিরা বলছেন, বৃষ্টি তাদের স্বপ্ন ভেঙেছে। আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছেন।

জানা গেছে, এবার যশোরে ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে অগ্রিম শীতকালীন সবজি চাষ করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি সবজির চাষ হয়েছে যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি, হৈবতপুর ও কাশিমপুর ইউনিয়নে। আবাদকৃত সবজির মধ্যে শিম, পটল, বেগুন, করলা, ঝিঙে, মিষ্টি কুমড়া, লাউ, লালশাক, ডাঁটাশাক, কাঁচামরিচ উল্লেখযোগ্য। তবে গত দেড় মাসের অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চাষাবাদ।

যশোরের চৌগাছা সড়কের আব্দুলপুর গ্রামের রাস্তার দুই পাশে তাকালেই দেখা যাবে শত শত পলিথিনে ঢাকা রয়েছে সবজির বীজতলা। প্রতি বছর আষাঢ় মাস থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় বীজতলা প্রস্তুত করে বাঁধাকপি ও ফুলকপির বীজ বপন করেন ৬৪ কৃষক। তবে গত জুলাই থেকে ধারাবাহিক বৃষ্টিপাতে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন চাষিরা। এবার ৭০০ হেক্টর জমিতে চারা উৎপাদন করা হয়েছিল।

যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি এলাকার সবজি চাষি শহিদুল ইসলাম, আশাদুল ইসলাম ও শামীম হোসেন জানান, দুই বছর ধরে গ্রীষ্মকালীন সবজি করে ক্ষতির মুখে আছি। গত দুই বছরের তুলনায় এ বছর বৃষ্টিপাত আরও বেশি। বৃষ্টির কারণে শিম, পটল, বেগুন, লাল শাক অনেকটা নষ্ট হয়ে গেছে। 
 
হৈবতপুরের সবজি চাষি রওশন আলী, মিজানুর, জয়নাল, হাফিজুর রহমানসহ অনেকেই জানান, ভারি বৃষ্টি তাদের স্বপ্ন কেড়ে নিয়েছে। শিম, পটল, করলা, বেগুনগাছে পচন ধরে শুকিয়ে গেছে। আবাদের খরচ উঠবে কি না সন্দেহ। টানা বৃষ্টিপাতের কারণে নতুন করে সবজি চাষ করতে পারেনি অনেকে। সবজির আবাদ করে এবার চাষিরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

কাশিমপুরের দৌলতদিহি গ্রামের চাষি জামাল উদ্দিন জানান, এবারের বৃষ্টিতে মাঠের পর মাঠ সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। তার মতো বহু চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

রিপন হোসেন নামে এক চাষি জানান, বৃষ্টিতে এবার আগাম শীতকালীন সবজি চাষ ব্যাহত হয়েছে। ফলে সবজি বাজারে আসবে দেরিতে। যার প্রভাব পড়েছে সবজির বাজারে। চড়া দামে সবজি বিক্রি হচ্ছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক ড. মোশাররফ হোসেন জানান, এবার বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশি। সেপ্টেম্বর থেকে ধারাবাহিক বৃষ্টিপাতের কারণে সবজি ও বীজতলার একটু ক্ষতি হয়েছে।