ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার দুই ইউনিয়নের মানুষের যাতায়াত সহজ করতে ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে একটি সেতু। কিন্তু সেতুটি নির্মাণের এক বছর পেরিয়ে গেলেও দুই পাশে সংযোগ সড়ক (অ্যাপ্রোচ) না থাকায় সেতুতে উঠতে হচ্ছে বাঁশের মই বেয়ে। এতে প্রতিদিন চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন দুই ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ ও শিক্ষার্থীদের।
উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়নের মজকুনী গ্রামের বাইতারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে নির্মিত সেতুটি সংযুক্ত করেছে সুবিদপুর ও কুশঙ্গল ইউনিয়নকে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সেতুটি বাইতারা ও সরমহল গ্রামকে যুক্ত করলেও সেতুর দুই পাশে সংযোগ সড়ক না থাকায় ব্যবহারকারীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের মই ব্যবহার করতে হচ্ছে। স্কুলের সামনে নির্মিত হওয়ায় প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থী ঝুঁকিপূর্ণভাবে পারাপার করছেন।
বাইতারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মোসা. হাওয়া আক্তার বলেন, ‘সেতুর অ্যাপ্রোচ ফেলে রাখায় শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অভিভাবকরাও প্রতিনিয়ত উদ্বিগ্ন।’
তালতলা বিজি ইউনিয়ন অ্যাকাডেমির দশম শ্রেণির ছাত্র মো. সোহান হাওলাদার বলেন, ‘সেতুটি বানানো হয়েছে এক বছর আগে, কিন্তু এখনো বাঁশের মই দিয়েই উঠতে হয়। এটি খুবই বিপজ্জনক।’
সেতুটি নির্মাণ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইসলাম ব্রাদার্স। নির্মাণ শেষ হলেও অ্যাপ্রোচের বালি ভরাটের কাজ ফেলে রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি। এলজিইডি কর্তৃপক্ষ বিল পরিশোধ করলেও এখনও পর্যন্ত সংযোগ সড়কের কাজ শুরু হয়নি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে আর দেখা যায়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. হানিফ খান বলেন, ‘এই সেতুটি অপরিকল্পিতভাবে তৈরি হয়েছে। বাইতারা অংশে মূল সড়ক সেতুর কার্নিশ দিয়ে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। অ্যাপ্রোচ ছাড়া এই সেতুর কোনো সুফল মিলবে না।’
নলছিটি উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইকবাল কবীর বলেন, ‘ঠিকাদারকে পাওয়া যাচ্ছে না, আমরা যোগাযোগের চেষ্টা করছি। প্রয়োজনে আমি নিজেই কাজের স্থানে যাব।’
তবে কাজ অসম্পূর্ণ থাকা সত্ত্বেও পুরো বিল পরিশোধ কীভাবে হলো- এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সিকিউরিটি মানি এখনও আমাদের কাছে রয়েছে।’
এস এ ই (সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার) মইনুল আজম বলেন, ‘সেতুর অ্যাপ্রোচে দ্রুত বালি ভরাট করে দেওয়া হবে। সেতুটি নির্মাণে প্রায় ৪০ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।’
এলাকাবাসীর দাবি, অবিলম্বে সেতুর দুই পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ না হলে সেতু নির্মাণের উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হবে। স্থানীয় ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী ও পথচারীদের নিরাপত্তার জন্য দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ চায় তারা।
আপনার মতামত লিখুন :