ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৫

ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের সাবেক তত্ত্বাবধায়কের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

ঝালকাঠি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৭, ২০২৫, ১১:১১ এএম
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ডা. শামীম আহমেদ। ছবি : রূপালী বাংলাদেশ

ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ডা. শামীম আহমেদের বিরুদ্ধে দরপত্রে অনিয়ম ও প্রতারণার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা করেছে।

বুধবার (২৬ নভেম্বর) দুদক পিরোজপুর সমন্বিত কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক পার্থ চন্দ্র পাল বাদী হয়ে মামলাটি (নম্বর-১৫) দায়ের করেন।

মামলায় দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ২০০৪-এর ৫(২) ধারা এবং দণ্ডবিধির ৪২০, ৪০৯ ও ১০৯ ধারা যুক্ত করা হয়েছে। আসামি করা হয়েছে চারজনকে- ডা. শামীম আহমেদ (বর্তমানে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক), ঠিকাদার শিপ্রা রানী পিপলাই, তার ছেলে সোহাগ কৃষ্ণ পিপলাই এবং স্বামী সত্য কৃষ্ণ পিপলাই।

দুদকের অভিযোগে বলা হয়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের জন্য ৫ কোটি টাকার এপিপি অনুমোদন করা হয়। এর মধ্যে ২ কোটি ১৬ লাখ ২৫ হাজার টাকার গজ, ব্যান্ডেজ, তুলা, ওষুধ, কেমিক্যাল, আসবাবপত্র ও কিচেন সামগ্রী কেনার জন্য দরপত্র আহ্বান করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ছয়টি গ্রুপে দরপত্র আহ্বান করা হয় এবং প্রতিটি গ্রুপে পাঁচটি করে দরপত্র বিক্রি দেখানো হলেও জমা পড়ে চারটি প্রতিষ্ঠানের দরপত্র।

দরপত্র জমা দেয়- মেসার্স আহসান ব্রাদার্স, পিপলাই এন্টারপ্রাইজ, বাপ্পী ইন্টারন্যাশনাল এবং শহিদুল ইসলাম নামে একজন দরদাতা। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির প্রধান ছিলেন ডা. শামীম আহমেদ। মূল্যায়নে উপযুক্ত বিবেচনায় তিন প্রতিষ্ঠান—মেসার্স আহসান ব্রাদার্স, পিপলাই এন্টারপ্রাইজ ও বাপ্পী ইন্টারন্যাশনালকে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়।

কিন্তু তদন্তে উঠে আসে, নির্বাচিত তিনটি প্রতিষ্ঠানই সোহাগ কৃষ্ণ পিপলাইয়ের নিয়ন্ত্রণে। প্রোপ্রাইটরশিপ অনুযায়ী—আহসান ব্রাদার্সের মালিক তার বাবা সত্য কৃষ্ণ পিপলাই, বাপ্পী ইন্টারন্যাশনালের মালিক তার মা শিপ্রা রানী পিপলাই এবং পিপলাই এন্টারপ্রাইজের মালিক স্বয়ং সোহাগ কৃষ্ণ পিপলাই। তিনটি প্রতিষ্ঠানের ঠিকানাও একই—বরিশাল সদর উপজেলার ৮৩৭/৮৩৮ উত্তর কাটপট্রি।

দুদক কর্মকর্তা পার্থ চন্দ্র পাল বলেন, দরপত্র সাজানো হয়েছে। কাছাকাছি দরে দর দেখিয়ে চক্রান্তমূলক প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করা হয়েছে, যা সরকারি ক্রয়বিধিমালা (পিপিআর) ২০০৮-এর ১২৭(৩)(খ) ধারা অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ।

অন্যদিকে ডা. শামীম আহমেদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে সাজানো ও বানানো অভিযোগ এনে মামলা করা হয়েছে। আমি সম্পূর্ণভাবে ষড়যন্ত্রের শিকার।

দুদক জানায়, মামলার রেকর্ড গ্রহণের পর কাগজপত্র ঢাকায় কমিশনে পাঠানো হয়েছে। কমিশন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগের পর প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ী পরবর্তী গ্রেপ্তার ও তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করবে।