ঝিনাইদহের ব্যবসায়ী সুদীপ জোয়ার্দারের রহস্যজনক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে একের পর এক প্রশ্ন ও সন্দেহ তৈরি হচ্ছে। ঘটনার ২০ দিন পার হলেও তার ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ না হওয়ায় উদ্বেগ জানিয়েছেন স্বজন ও বন্ধুমহল। এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুপুরে ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সুদীপের মৃত্যুকে ‘সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ দাবি করে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তার বন্ধু সওগাতুল ইসলাম হিমেল।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সুদীপ জোয়ার্দারের মামা প্রভাত রায়, মেশো মশাই দেব প্রসাদ রায় এবং বন্ধু আবিদ হাসান নয়ন, বাদশা বুলবুল, ফাহাদ মাহমুদ, মেহেদী হাসান, শোভন সাহা, আব্দুল্লাহ আল নোমান, এম এম মনিরুজ্জামান, বাহারুল ইসলাম, সালাম হোসেন, সামিউল হক ও স্বাধীন রহমানসহ প্রতিবেশীরা।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির লোভে গত ৫ জুলাই রাতে সুদীপকে তার সৎ মা চম্পা রানী ও পালিত ভাই শিলন জোয়ার্দার হত্যা করেন। এরপর ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।
হিমেল বলেন, ‘সুদীপের মরদেহের মাথা, পিঠ ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন ছিল, যা আত্মহত্যার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। মৃত্যুর পর তার পিতা সুনীল জোয়ার্দার, সৎ মা ও পালিত ভাই তড়িঘড়ি করে মরদেহ সৎকারের চেষ্টা করেন।’
বক্তব্যে আরও বলা হয়, মৃত্যুর আগে দীর্ঘদিন ধরে সুদীপ পারিবারিক অবহেলা ও মানসিক নির্যাতনের শিকার ছিলেন। অথচ তিনি অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল পরিবারে জন্ম নিয়েও মাত্র ১৩০ টাকা মজুরিতে বাবার দোকানে কাজ করতেন।
সাংবাদিকদের সামনে তারা অভিযোগ করেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ২০ দিনেও প্রকাশ না হওয়ায় তদন্তের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সুদীপের বন্ধুরা সাত কর্মদিবসের মধ্যে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের দাবি জানিয়ে বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে তারা কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবেন।
উল্লেখ্য, ব্যবসায়ী সুদীপ জোয়ার্দারের মৃত্যুর পর ঝিনাইদহ ও ঢাকায় একাধিক মানববন্ধন, বিক্ষোভ এবং স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি পালিত হয়েছে। ঘটনার পর থেকে সৎ মা চম্পা রানী ও পালিত ভাই শিলন জোয়ার্দার পলাতক রয়েছেন।