ঝিনাইদহের মহেশপুরে নাজমুন্নাহার নামের এক স্কুল শিক্ষিকাকে মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য নাসির উদ্দীনের বিরুদ্ধে। ভাতার তালিকায় নাম ওঠার পর ৬ কিস্তির টাকাও উত্তোলন করেছেন ওই শিক্ষিকা।
দরিদ্র মায়েরদের জন্য বরাদ্ধকৃত মাতৃত্বকালীন ভাতার তালিকায় স্কুল শিক্ষিকার নাম থাকায় এলাকার সাধারণ মানুষের মুখে মুখে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। এলাকাবাসী বলছেন, ইউপি সদস্যের স্বজনপ্রীতি ও স্কুল শিক্ষিকা তার আপন ছোট ভাইয়ের স্ত্রী হওয়ায় তিনি তার ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউপির ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নাসির উদ্দীন তার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী কাজিরবের ইউপির ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা নাজমুন্নাহারকে দরিদ্র মায়েরদের জন্য বরাদ্ধকৃত মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড করে দেন। মাতৃত্বকালীন ভাতার তালিকায় নাম থাকায় নিয়তিম টাকাও পাচ্ছেন সেই শিক্ষিকা। ইতোমধ্যে তিনি ৬ কিস্তির ১০,০০০ হাজার টাকা উত্তোলন করেছেন।
ভাতাভোগী স্কুল শিক্ষিকা নাজমুন্নাহার বলেন, ‘চাকরি পাওয়ার আগে মিয়া ভাই (ইউপি সদস্য) আমাকে ভাতার কার্ডটি করে দিয়েছেন।’ তাহলে চাকরি পাওয়ার পরও কেন দরিদ্র মায়েরদের জন্য বরাদ্ধকৃত এই ভাতার টাকা নিচ্ছেন, এমন প্রশ্নের কোনো উত্তন দেননি তিনি।
স্থানীয় খায়ের হোসেন বলেন, ‘আমাদের মেয়ে-বৌদের ভাতার জন্য আবেদন করেও ভাতা পাই না, মেম্বারা তাদের আত্বীয়স্বজনদের দিয়ে দেয়।’
নজরুল ইসলাম নামের আরেকজন বলেন, মাতৃত্বকালীন ভাতার টাকা যারা পাওয়ার যোগ্য তাদেরকে না দিয়ে নাসির মেম্বার তার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী স্কুল শিক্ষিকাকে করে দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, যাদের কোনো অভাব নেই তারা পাচ্ছে ভাতা, আর গরিবেরা মরছে না খেয়ে।
ইউপি সদস্য নাসির উদ্দীন বলেন, ‘চেয়ারম্যানের সাথে আমার ছোট ভাইয়ের সম্পর্ক ভালো থাকায় ভাতার কার্ড করে দিয়েছে চেয়ারম্যান, আমি না।’
বাঁশবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমূল হুদা জিন্টু বলেন, ‘এমনটা হওয়া সম্ভব না, কারণ মেম্বাররা যাচাইবাছাই করেন। যারা পাওয়ার যোগ্য তাদেরকে দেওয়া হয়।’
উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা উম্মে সালমা বলেন, ‘দরিদ্র মায়েরদের জন্য বরাদ্ধকৃত মাতৃত্বকালীন ভাতার কাড কোনোভাবেই একজন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা পেতে পারেন না। বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’