জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে হিল্লা বিয়ে না করার জেরে ১৮ মাস ধরে ‘সমাজচ্যুত’ রাখা হয়েছে এক দিনমজুরকে। সম্প্রতি প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে মারধর করে আহত করেছেন। আহত দিনমজুর আব্দুল জলিল প্রামাণিক থানায় মামলা করেছেন।
গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, পারিবারিক কলহের কারণে আব্দুল জলিল রাগের মাথায় তার স্ত্রীকে তালাক দেন। এ ঘটনার ২৯ দিন পর তিনি পুনরায় স্ত্রীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় গ্রামের মাতব্বরেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আব্দুল জলিল প্রামাণিকের পরিবারকে সমাজচ্যুত করে রাখেন।
গত ১৫ আগস্ট রাত আটটার দিকে গ্রামের মসজিদের দিকে রওনা হওয়ার সময় মাতব্বরেরা তাকে দুই দফায় মারধর করেন। এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে যায়। পরে তিনি চিকিৎসা নিয়ে থানায় আটজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
আব্দুল জলিল রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, আমি রাগের মাথায় স্ত্রী তালাক দিয়েছিলাম। ২৯ দিন পর আবার বিয়ে পড়ে নিয়েছি। একারণে গ্রামের মাতব্বর রকি খান, মিল্টন খাঁ, আবু সুফিয়ানসহ আরও ১০-১২ জন আমাকে সমাজচ্যুত করেছেন। তালাক দিলে পুনরায় বিয়ে করা যাবে ঢাকার একজন মুফতির মতামত নিয়ে আসার পরও তারা মানেননি।
তারা বলছে, হিল্লা বিয়ে ছাড়া আমার বিয়ে বৈধ হবে না। তারা আমাকে দীর্ঘ ১৮ মাস ধরে গ্রামের মসজিদে নামাজ আদায়ে ও যে কোনও জানাজায় অংশ নিতে দেননি। সমাজচ্যুত করার জের ধরে মসজিদে যাওয়ার সময় মাতব্বরদের একাংশের লোকজন আমাকে মেরে হাত ভেঙে দিয়েছে।
রায়কালী ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মন্ডল রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, তিনি রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। এঘটনায় গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলকে সমাজচ্যুত করেছেন। সমাজচ্যুতের ঘটনার জের ধরে তাঁকে মারধর করা হয়েছে। এতে তাঁর বাম হাত ভেঙেছে বলে জেনেছি।
আক্কেলপুর থানার ওসি শফিকুল ইসলাম রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, আব্দুল জলিল প্রামাণিক থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগটি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় মঙ্গলবার এটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। আসামীদের গ্রেপ্তারের জোর চেষ্টা চলছে।”
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন