জয়পুরহাটের আক্কেলপুরের গোপীনাথপুর ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) এক বছরের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় প্রতিষ্ঠানটির বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।
রোববার (২৩ নভেম্বর) সকাল ১০টার পর বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় পুরো প্রতিষ্ঠান অন্ধকারে ডুবে যায়। এতে আবাসিক শিক্ষার্থীরা হোস্টেল ছাড়তে শুরু করেছেন। পরিস্থিতি বিবেচনায় আইএইচটি কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ ঘোষণা করেছে।
সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালে একাডেমিক কার্যক্রম শুরুর পরও গোপীনাথপুর আইএইচটির নিজস্ব অর্থনৈতিক কোড চালু হয়নি। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের বরাদ্দের ওপর নির্ভর করে ব্যয়ভার পরিচালিত হলেও গত এক বছর ধরে সেই বরাদ্দ বন্ধ রয়েছে।
এতে ১৬ লাখ ৭৩ হাজার ৬৮৩ টাকার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া জমে যায়। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির একাধিক তাগাদা সত্ত্বেও বরাদ্দ না থাকায় কর্তৃপক্ষ বিল পরিশোধ করতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি গতকাল প্রতিষ্ঠানটির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে।
আইএইচটি সূত্রে জানা যায়, ফার্মেসি ও ল্যাব টেকনোলজি এ দুটি ট্রেডে এখানে ৪৫০ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেন। দুটি পৃথক হোস্টেলে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী আবাসিক থাকেন। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় আবাসিক শিক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। সোলার সিস্টেম থাকলেও তা বহুদিন ধরে অচল। রাতে বিদ্যুৎ না থাকায় নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়েছে। এসব পরিস্থিতির বিবেচনা করে সোমবার থেকে পাঠদান ও প্রশাসনিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হয়েছে।
আইএইচটির শিক্ষার্থী আখতারুজ্জামান আক্ষেপ বলেন, ‘আমরা নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে এখানে পড়তে এসেছি। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে আমাদের পড়াশোনা তো দূরের কথা, ন্যূনতম স্বাভাবিকভাবে থাকা-খাওয়া পর্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে। দিনরাত অন্ধকারে থাকতে হচ্ছে, হোস্টেলে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যেও থাকতে হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ধরনের ভোগান্তি আমরা কখনোই প্রত্যাশা করিনি। শিক্ষার্থী হিসেবে আমাদের ন্যায্য অধিকার হলো একটি নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন শিক্ষার পরিবেশ পাওয়া। তাই যত দ্রুত সম্ভব বিদ্যুতের সমস্যা সমাধান করে আমাদের কষ্ট লাঘবের দাবি জানাচ্ছি।’
স্থানীয়রা বলছেন, একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমন অবস্থায় পড়া অত্যন্ত দুঃখজনক। দ্রুত বরাদ্দ ও সংযোগ পুনঃস্থাপনের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় সচেতন মহল।
গোপীনাথপুর ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) অধ্যক্ষ আবদুল কুদ্দুস মণ্ডল বলেন, ‘অর্থনৈতিক কোড না থাকায় আমাদের ব্যয়ভার এখনো সঠিকভাবে নির্ধারিত নয়। গত এক বছর ধরে বরাদ্দ বন্ধ থাকায় বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়েছে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির তাগাদা পেয়েছি, কিন্তু বরাদ্দ না থাকায় পরিশোধ সম্ভব হয়নি।’



সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন