খুলনার রূপসায় ‘মানবিক সাহায্য সংস্থা - মহিলা ঋণদান প্রকল্প’ নামে একটি এনজিও প্রতারণার মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মুরশিদা বেগম নামে এক ভুক্তভোগী রূপসা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার নৈহাটি ইউনিয়নের জয়পুর গ্রামে ইউপি সদস্য মো. মাহফুজের বাড়ির সামনে জনৈকা রুনা নামে এক নারীর বাড়ি ভাড়া নিয়ে ৩ জন পুরুষ ও ১ জন নারী এনজিওটির কার্যক্রম শুরু করে। গত ১ জুন থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত তারা স্থানীয় দরিদ্র মানুষদের প্রলোভন দেখিয়ে সদস্য করে।
প্রতারকরা জানান, প্রতি সদস্যকে ১ থেকে ৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়া হবে। তারা আরও বলেন, ৩ লক্ষ টাকা ঋণ নিতে চাইলে অগ্রিম ৩০ হাজার টাকা জমা দিতে হবে এবং ঋণটি ৩ বছর মেয়াদে পরিশোধ করতে হবে। এসব প্রলোভনের ফাঁদে পড়ে আশপাশের গ্রামের শতাধিক মানুষ সদস্য হন।
বাদী মুরশিদা বেগমের কাছ থেকে ঋণ দেওয়ার কথা বলে ২৩ হাজার ৫০০ টাকা নেয় প্রতারক চক্রটি। একইভাবে রাবেয়া খাতুনের কাছ থেকে ১৫ হাজার এবং ফাতেমার কাছ থেকে ২০ হাজার ৫০০ টাকা সহ প্রায় ৪০ থেকে ৫০ জনের কাছ থেকে বিভিন্ন অংকের টাকা সংগ্রহ করে তারা।
টাকা নেওয়ার সময় এনজিওটির কর্মীরা জানান, তাদের অফিস খুলনার দৌলতপুর মহাসিন কলেজের পাশে। কিন্তু ভুক্তভোগীরা সেখানে গিয়ে কোনো অফিস না পেয়ে ফিরে এসে জয়পুর গ্রামে অফিসে গিয়ে দেখেন সেটিও তালাবদ্ধ। এরপর প্রতারকদের মোবাইলে ফোন দিলে সব ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
খবরটি চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে আরও শতাধিক ভুক্তভোগী উপস্থিত হয়ে জানান, একই কায়দায় তাদের কাছ থেকেও টাকা নেওয়া হয়েছে এবং প্রতারিতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
প্রতারক চক্রটির সদস্যরা হলেন, ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার ব্রাক্ষন্দী গ্রামের চান্দা মাতুব্বরের ছেলে বিল্লাল মাতুব্বর, মুন্সীগঞ্জ জেলার ইছাপুর গ্রামের ইমান ঢালীর স্ত্রী মিনারা বেগম, বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার পূর্বধামসার গ্রামের গোলাম সরোয়ারের ছেলে শাহাব উদ্দিন এবং আব্দুস সালাম।
এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে এবং প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও প্রতারকদের গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়েছে।