কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্ত দিয়ে নারী, পুরুষ ও শিশুসহ ৯ জন বাংলাদেশিকে পুশ-ইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
শুক্রবার (৩০ মে) আনুমানিক রাত সাড়ে ১২টার দিকে উজেলার রামকৃষ্ণপুর সীমান্ত দিয়ে তাদের ঠেলে পাঠানো হয়।
শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা ভাগজোত ঘাট এলাকায় একটি নৌকায় সন্দেহভাজন অবস্থায় ৯ জনকে দেখতে পান। পরে তাদের হেফাজতে নিয়ে বিকেলের দিকে দৌলতপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়।
শনিবার বিকেলে কুষ্টিয়া বিজিবির ৪৭ ব্যাটালিয়নের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আটক ব্যক্তিরা দুইটি পরিবারের সদস্য। তাদের মধ্যে ৪ জন পুরুষ, ২ জন নারী, ২ জন কিশোরী ও একজন ছেলে শিশু রয়েছে। তারা কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী থানার বাসিন্দা। প্রায় চার বছর আগে তারা অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করে দিল্লির একটি ইটভাটায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিলেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, সম্প্রতি ভারতের অভ্যন্তরে অবৈধ বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে ধরপাকড় বেড়ে যাওয়ায় এবং আত্মসমর্পণকারীদের হয়রানি না করার সরকারি ঘোষণার প্রেক্ষিতে তারা স্বেচ্ছায় দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন। ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় বিজিবি তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় থানা ও বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করে। সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে সীমান্ত পিলার ৮৫/১০-এস এর কাছে একটি পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিজিবি পুশ-ইনের ঘটনায় কড়া প্রতিবাদ জানায়।
৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহাবুব মুর্শেদ রহমান বলেন, ‘বিএসএফ তাদের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করলেও ভবিষ্যতে আইনি প্রক্রিয়ায় হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।’
এ বিষয়ে ভারতের ১৪৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সঙ্গে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে আরেকটি পতাকা বৈঠকের প্রক্রিয়া চলমান।
প্রচলিত আইন অনুযায়ী, কোনো বিদেশি নাগরিককে দেশে ফেরত পাঠাতে হলে তা যৌথ বৈঠকের মাধ্যমে আইনগত প্রক্রিয়া মেনে করতে হয়। কিন্তু এই ঘটনায় বিএসএফ তা না করে সরাসরি পুশ-ইন করেছে, যা আন্তর্জাতিক নিয়ম লঙ্ঘনের শামিল বলে জানিয়েছে বিজিবি।
বিজিবি বলছে, তাদের হেফাজতে নেওয়ার পর ৯ জনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়েছে যে, তারা সবাই শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন।