লালমনিরহাটে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সলেডি স্প্যার বাঁধের নিচে বসানো হয়েছে বালু খেকো চক্রের বোমা মেশিন। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে লুট হচ্ছে তিস্তা নদীর বালু।
জানা গেছে, তিস্তা নদীর ভাঙন রোধের জন্য বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ২০০২ সালে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের গোবর্ধন গ্রামে বাঁধ-২ নির্মাণ করে। বাঁধের এক শত গজ ভাটিতে বোমা মেশিন বসিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বালু উত্তোলন করছে একটি চক্র। স্থানীয়দের অভিযোগ, এ চক্রের নেতৃত্বে রয়েছেন আওয়ামী লীগের সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের এপিএস মিজানুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী শওকত হোসেন ওরফে ‘বালু শওকত’।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, দীর্ঘদিন ধরে সরকারি কাজের অজুহাত দেখিয়ে তিস্তা নদী থেকে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছেন শওকত। বাঁধের এক শত গজ ভাটিতে বোমা মেশিন বসানো হয়েছে, যা ধ্বসনের ঝুঁকি সৃষ্টি করছে। এমন ঘটলে শতাধিক বসতভিটা ও আবাদি জমি নদীর তীরে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
শনিবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, বাঁধের এক শত গজ ভাটিতে বোমা মেশিন বসানো হয়েছে। দক্ষিণে প্রায় পাঁচ শত গজ দূরে বিভিন্ন পরিবারের বাড়ির পাশে স্তুপ করা হচ্ছে তিস্তা নদীর বালু। স্থানীয়রা জানান, বালু উত্তোলন শেষে তা ট্রাকে লোড করা হয়। একজন শ্রমিক জানিয়েছেন, শওকতের নির্দেশে তারা কাজ করছে, মেশিন ও তেলের দায়িত্ব শওকতের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে এপিএস মিজানের হয়ে কোটি কোটি টাকার বালু উত্তোলন করেছে শওকত। মিজান পলাতক হলেও শওকত স্থানীয় অন্য নেতাদের সঙ্গে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। একই স্থানে বারবার বালু উত্তোলনের কারণে বাঁধটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
শওকত আলী বলেন, সলেডি স্প্যার বাঁধের ভাটিতে প্রায় ১৩ হাজার জিও ব্যাগে বালু ভরাটের কাজ পেয়েছেন দিনাজপুরের একজন ঠিকাদার। তার নির্দেশে নদী থেকে বালু উত্তোলন করেছেন। এ বিষয়ে অন্যান্য প্রশ্নে তিনি মন্তব্য করেননি।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনিল কুমার জানান, জিও ব্যাগে বালু ভরাট ও ডাম্পিংয়ের কাজ চলছে। তবে বাঁধের নিচে মেশিন বসানো ঠিক নয়, বিষয়টি দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিধান কান্তি হালদারকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।