বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৩, ২০২৫, ০৯:৪২ পিএম

দুই শিশুকে শ্বাসরোধে হত্যাচেষ্টা, মামলা নিতে গড়িমসি পুলিশের

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৩, ২০২৫, ০৯:৪২ পিএম

গলাচেপে ধরে দুই শিশুকে হত্যার চেষ্টা চালানোর ভিডিও ধারণ করে প্রবাসী স্ত্রীকে পাঠান স্বামী। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

গলাচেপে ধরে দুই শিশুকে হত্যার চেষ্টা চালানোর ভিডিও ধারণ করে প্রবাসী স্ত্রীকে পাঠান স্বামী। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

মানিকগঞ্জে দুই সন্তানকে শ্বাসরোধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে থানায় গেলেও মামলা নেয়নি পুলিশ—এমন অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগীর পরিবার। অভিযোগে বলা হয়েছে, প্রবাসে থাকা স্ত্রী মুক্তা আক্তারের কাছে টাকা দাবি করে ব্যর্থ হয়ে স্বামী রুবেল সন্তানদের গলাটিপে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করেন এবং সেই ভয়াবহ দৃশ্যের ভিডিও পাঠিয়ে মুক্তাকে ভয় দেখান।

মুক্তার বাবা আব্দুল আহাদ জানান, তিনি গত ৯ নভেম্বর সিংগাইর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন, কিন্তু পুলিশ তা মামলা হিসেবে নেয়নি। বরং ‘পারিবারিক বিষয়’ উল্লেখ করে ঘটনাটি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে সন্তান অপহরণের অভিযোগে মানিকগঞ্জ সদর থানায় আরেকটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। বর্তমানে বিষয়টি পুলিশ সুপার পর্যন্ত গড়িয়েছে।

লিখিত অভিযোগ ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাত বছর আগে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার ভাড়ারিয়া গ্রামের আব্দুল আহাদের মেয়ে মুক্তা আক্তারের (২৫) সঙ্গে সিংগাইর উপজেলার জয়মন্টপ এলাকার বাবুল প্রামাণিকের ছেলে মো. রুবেলের (৪২) বিয়ে হয়। এটি ছিল মুক্তার দ্বিতীয় বিয়ে। প্রথম স্বামী মারা যাওয়ার পর তিনি রুবেলকে বিয়ে করেন।

প্রথম সংসারে মুক্তার আপন (৮) নামের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। রুবেলের সংসারে জন্ম নেয় আরেক ছেলে আলী হোসেন (৬)। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে মুক্তাকে নির্যাতন করতেন রুবেল। নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে প্রায় চার মাস আগে মুক্তা বিদেশে পাড়ি জমান। কিন্তু সেখান থেকেও রুবেলের টাকা দাবির চাপ ও হুমকি বন্ধ হয়নি।

অভিযোগে বলা হয়, গত ৫ নভেম্বর মুক্তা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে রুবেল দুই সন্তান আপন ও আলী হোসেনকে গলাটিপে হত্যাচেষ্টা করেন। এতে দুই শিশু অজ্ঞান হয়ে পড়ে এবং নাক দিয়ে রক্ত বের হয়। ঘটনাটির ভিডিও ধারণ করে মুক্তার কাছে পাঠান রুবেল, সঙ্গে বার্তা দেন, ‘টাকা না দিলে সন্তানদের মেরে ফেলব।’

প্রবাসে থাকা মুক্তা বিষয়টি জানালে তার বাবা আব্দুল আহাদ ৯ নভেম্বর সিংগাইর থানায় অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘আমি সব খুলে বলেছিলাম। তখন এসআই সিদ্দিকুর রহমান অভিযোগ নিতে রাজি হলেও মামলা করেননি।’

অভিযোগের পর পুলিশ বড় ছেলে আপনকে উদ্ধার করে দাদার জিম্মায় দিলেও ছোট ছেলে আলী হোসেনকে উদ্ধার করতে পারেনি। পরিবারের দাবি, রুবেল তাকে অন্যত্র আটকে রেখেছেন।

আব্দুল আহাদ বলেন, ‘আমি মামলা করতে চাইলে পুলিশ নানা অজুহাতে বলে, এটা পারিবারিক ব্যাপার।’

এরপর বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকাল ১১টার দিকে রুবেল আবারও সদর উপজেলার ভাড়ারিয়া এলাকায় এসে উদ্ধার হওয়া সন্তান আপনকে অপহরণ করে নিয়ে যান। পরে আব্দুল আহাদ সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।

সদর থানার ওসি (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি পুলিশ সুপার ইয়াছমিন আক্তারকে জানানো হয়েছে। তার নির্দেশে ভুক্তভোগীকে সিংগাইর থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছে।’

এদিকে, সন্তান হত্যাচেষ্টার সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। স্থানীয় আইনজীবীরা বলছেন, এত গুরুতর অভিযোগেও মামলা না নেওয়া পুলিশের দায়িত্বে অবহেলা। এতে আসামি আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

জানতে চাইলে এসআই সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘আমি আপনকে উদ্ধার করে দিয়েছি। আলী হোসেন রুবেলের নিজ সন্তান, তাই তার কাছেই রেখেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘রুবেল জানিয়েছেন স্ত্রী টাকা দিচ্ছে না, তাই ভয় দেখানোর জন্য এমনটা করেছেন।’

তবে হত্যাচেষ্টার ভিডিও ও অভিযুক্তের স্বীকারোক্তির পরও মামলা না নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে এসআই সিদ্দিকুর বলেন, ‘এটা অনিচ্ছাকৃত ভুল। তবে আজ বাদিকে থানায় ডাকা হয়েছে এবং মামলা রুজুর প্রক্রিয়া চলমান।’

এ বিষয়ে সিংগাইর থানার ওসি জে ও এম তৌফিক আজমের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।

Link copied!