মৌলভীবাজার পৌর শহরের বিভিন্ন সড়কসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মৌলভীবাজার-কাগাবলা ও মৌলভীবাজার-শমশেরগঞ্জ সড়কের বেহাল দশায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড, সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন এবং পার্শ্ববর্তী দুই উপজেলার চারটি ইউনিয়নের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ১০ চাকার বালুবাহী ট্রাক ও ভারী কাভার্ডভ্যান নিয়মিত চলাচল করায় কম ধারণক্ষমতার সড়কগুলো ভেঙেচুরে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
সূত্র জানায়, পৌর এলাকার অলিগলি, পশ্চিমবাজার ও পুরাতন হাসপাতাল সড়ক চলাচলের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি মৌলভীবাজার সদর থেকে কাগাবলা ও শমশেরগঞ্জ বাজার পর্যন্ত প্রায় ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক ব্যবহার করেন সদর উপজেলার আমতৈল, কাগাবলা ও নাজিরাবাদ ইউনিয়নের একাংশের মানুষ।
এ ছাড়া শ্রীমঙ্গলের মির্জাপুর, ভুনবী এবং হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ও পানিউমদা ইউনিয়নের বাসিন্দারাও এ সড়ক দিয়ে নিয়মিত চলাচল করেন। দীঘিরপাড়, অলহা, সূর্যপাশা, আথানগিরি ও ধনদাশ এলাকায় খানা-খন্দে ভরা সড়কের কারণে ছোট-বড় যানবাহন ও যাত্রীরা প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।
টেম্পোচালক মিলন মিয়া বলেন, ‘রাস্তার খারাপ অবস্থার কারণে আধা ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে এক ঘণ্টারও বেশি সময় লাগে। এতে যাত্রীদের ভোগান্তি যেমন বাড়ছে, তেমনি যানবাহনের যন্ত্রাংশও নষ্ট হচ্ছে।’
দীঘিরপাড় বাজারের পল্লি চিকিৎসক জগদীশ চন্দ্র দে জানান, ‘এক বছর ধরে এ রাস্তার করুণ অবস্থা। সিরিয়াস রোগী, বিশেষ করে ডেলিভারি রোগী নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।’
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জীবন দে পলাশ বলেন, ‘দিন-রাত ভারী ট্রাক, ইটবাহী যান ও কাজী ফার্মের ডিম এবং ফিডবাহী কাভার্ডভ্যানের কারণে রাস্তা ভেঙে গেছে। দ্রুত এলজিইডিকে পদক্ষেপ নিতে হবে।’
পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী আনোয়ার সাদাত হোসেন ভূঁইয়া জানান, পৌর এলাকার সড়কগুলো মেরামতের জন্য টেন্ডার সম্পন্ন হয়েছে। বৃষ্টি থামলেই কাজ শুরু হবে।
এ বিষয়ে এলজিইডি মৌলভীবাজার সদর উপজেলা প্রকৌশলী শাহেদ হোসাইন বলেন, ‘গত জুলাই মাসে সড়কগুলোর ভাঙাচোরা অবস্থা সরেজমিনে দেখা হয়েছে। এরই মধ্যে রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কার প্রকল্প ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া মাত্র সংস্কারকাজ শুরু হবে।’