ঢাকা শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

যুবদল নেতাসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৫, ২০২৫, ১০:৪৪ পিএম
প্রধান আসামি যুবদল নেতা মো. আব্দুল আহাদ।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে সরকারি ইজারাকৃত জলমহাল থেকে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা না পেয়ে ১০ লাখ টাকার মাছ লুটের ঘটনায় যুবদল নেতা মো. আব্দুল আহাদকে প্রধান আসামি করে ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এজাহারে ১৫ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ১৫০ থেকে ২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে মহামায়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সম্পাদক ও আলীশারকুলের বাসিন্দা সুজিত সরকার বাদী হয়ে শ্রীমঙ্গল থানায় এ মামলা দায়ের করেন।

আসামিরা হলেন—উপজেলার ভূনবীর ইউনিয়নের আলীশারকুল গ্রামের মৃত মাক্কু মিয়ার ছেলে মো. আব্দুল আহাদ। তিনি ভূনবীর ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক। এছাড়া একই গ্রামের আরফান মিয়া (৩৫), হাকিম মিয়া (৫৫), জুয়েল মিয়া (২৫), আব্দুল্লাহ মিয়া (৩৫), সুমন মিয়া (৩২), রুবেল মিয়া (২৭), রিপন মিয়া (২২), ইমন মিয়া (১৮), সানু মিয়া (৩৫), রাজপাড়া গ্রামের তাহির মিয়া (৩৬), বাছিদ মিয়া (৩৫), রুবেল মিয়া (৩২), পাত্রিকুল গ্রামের শাহিন মিয়া (৪৭) এবং এলাইচ মিয়া (৪৫)। এছাড়াও অজ্ঞাত ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, যুবদল নেতা মো. আব্দুল আহাদ দীর্ঘদিন ধরে জলমহাল ইজারাদার সমিতির কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। সমিতি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে গত ৩০ নভেম্বর রাত ১০টায় আব্দুল আহাদ মাইকিং করে জলমহালের ইজারা ‘অবৈধ’ বলে প্রচার করেন। 

পরদিন ১ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকাল ৯টায় আহাদের নেতৃত্বে শতাধিক লোক জলমহালে ঢুকে মাছ ধরে নিয়ে যায়। এতে সমিতির প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। বাধা দিতে গেলে হামলার চেষ্টা করা হয় এবং উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

সুজিত সরকারের অভিযোগ, আব্দুল আহাদকে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সে বলে, হাজী মুজিবুর রহমান চৌধুরী তাকে বিলে মাছ মারার নির্দেশ দিয়েছেন। সে নিজেকে মৌলভীবাজার-৪ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী ও বিএনপি নেতা হাজী মুজিবুর রহমান চৌধুরীর লোক পরিচয় দিয়ে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করেন।

তবে যুবদল নেতা আব্দুল আহাদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘চাঁদাবাজির বিষয়টি মিথ্যা। আমরা স্থানীয়দের অভিযোগে হাওরের নেটের বেড়া অপসারণ করতে গিয়েছি।’

এ বিষয়ে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন জারু বলেন, অভিযোগ সত্য হলে দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এম এ মুহিত বলেন, ‘দুই দিন আগে অভিযোগের বিষয়টি শুনেছি। সঠিক প্রমাণ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটি থানা যুবদল কমিটির দায়িত্ব—তারা তদন্ত করে রিপোর্ট দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দল এ বিষয়ে কঠোর অবস্থানে আছে। যে দোষ করবে সে শাস্তি পাবে।’

ধানের শীষের প্রার্থী বিএনপি নেতা মুজিবুর রহমান চৌধুরী (হাজী মুজিব) বলেন, ‘কেউ যদি চাঁদাবাজি বা সন্ত্রাসী কাজ করে থাকে, সে আমার লোক না। আমি ওর সঙ্গে নাই। প্রশাসন দেখবে। সে যদি আমাদের পক্ষ থেকে নেতিবাচক কিছু করে থাকে, সে জেলে যাবে।’

শ্রীমঙ্গল থানার ওসি মো. আমিনুল ইসলাম জানান, অভিযোগের প্রেক্ষিতে গতকাল একটি চাঁদাবাজির মামলা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।