ঢাকা শনিবার, ১৭ মে, ২০২৫

ময়মনসিংহে আটজন ডাক্তার দিয়ে চলে ৫০ শয্যা হাসপাতাল

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মে ১৭, ২০২৫, ১২:১৮ পিএম
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে গিয়ে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। ৫০ শয্যার এই হাসপাতালে সরকার নির্ধারিত নিয়ম থাকলেও তা মানার বালাই নেই। মাত্র আটজন ডাক্তার দিয়ে কোনোভাবে টিকিয়ে রাখা হয়েছে পুরো হাসপাতালের কার্যক্রম।

সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত অফিস সময় হলেও, বাস্তবে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। রোগীরা সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট সংগ্রহ করলেও চিকিৎসক আসেন অনেক দেরিতে। কখনো ১০টা, আবার কখনো তারও পরে। ফলে রোগীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় চিকিৎসা না পেয়ে।

সরেজমিন সকাল সাড়ে ৯টায় হাসপাতাল চত্বরে গিয়ে দেখা যায়, বহির্বিভাগে টিকিট নিতে আসা অনেক রোগী বসে আছেন কিন্তু কোনো চিকিৎসকের দেখা নেই। ডাক্তারদের কক্ষে তালা ঝুলছে। একাধিক রোগী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকারি হাসপাতাল হলেও কোনো নিয়ম-শৃঙ্খলা নেই।

টিকিট কাউন্টারের কর্মচারী এনায়েতুল্লাহ জানান, ডাক্তার প্রায়ই সকাল ১০টার পর আসেন। অথচ হাসপাতালের অফিস সময়সূচি স্পষ্ট করে বোর্ডে লেখা সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, মাত্র আটজন ডাক্তার দিয়ে এত বড় হাসপাতাল চালানো কঠিন। অনেকে অসুস্থ হয়ে গেলে কিংবা জরুরি প্রয়োজনে অনুপস্থিত থাকলে চিকিৎসা ব্যাহত হয়।

তবে রোগীরা বলছেন ভিন্ন কথা। গাবরবোয়ালী গ্রামের রাকিব নামের এক রোগী বলেন, সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে এসে বসেছি, এখন প্রায় ১০টা বাজে তবুও ডাক্তার নেই। অনেক দূর থেকে এসেছি, তবু চিকিৎসা না পেয়ে বসে থাকতে হচ্ছে। এটা খুবই কষ্টদায়ক।

রোগীদের অভিযোগ, পর্যাপ্ত তদারকি ও জবাবদিহিতার অভাবে এমন নৈরাজ্য চলছে। সরকারি হাসপাতাল হওয়ায় ডাক্তারেরা ইচ্ছেমতো আসেন ও যান। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দরিদ্র ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষ। যারা বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পারেন না। 

স্থানীয়রা দাবি করছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উচিত এ সব হাসপাতালে নিয়মিত নজরদারি বাড়ানো এবং পর্যাপ্ত সংখ্যক চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা।