ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুতিদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। হুতিদের ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলি বাহিনী প্রতিহত করার পরই এই হুমকি আসে।
বৃহস্পতিবার আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ করা এক পোস্টে কাটজ বলেন, ইয়েমেনের সঙ্গে তেহরানের মতো আচরণ করা হবে। তেহরানে সাপের মাথায় আঘাত করার পর, আমরা ইয়েমেনে হুতিদেরও আঘাত করব।
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যেই হাত তুলবে, সেই হাত কেটে ফেলা হবে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, ইয়েমেন থেকে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র তাদের বিমানবাহিনী সফলভাবে প্রতিহত করেছে।
এই ঘটনার পরপরই ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর কাছ থেকে এই কড়া হুমকি আসে। আনাদোলু জানিয়েছে, এই বিষয়ে হুতিদের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এর আগে গত ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানে সরাসরি ও উসকানিমূলক হামলা চালায়, যাতে ইরানের উচ্চপর্যায়ের সামরিক কর্মকর্তা, পারমাণবিক বিজ্ঞানী এবং সাধারণ নাগরিক নিহত হন।
এর প্রায় এক সপ্তাহ পর, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পরমাণু স্থাপনায় বোমা হামলা চালিয়ে যুদ্ধে প্রবেশ করে। ইরান এই আচরণকে জাতিসংঘ সনদ, আন্তর্জাতিক আইন এবং পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তির (এনপিটি) গুরুতর লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করে আসছে।
এই হামলার জবাবে ইরানি সশস্ত্র বাহিনী ইসরায়েল অধিকৃত অঞ্চলের বিভিন্ন কৌশলগত স্থাপনায় এবং কাতারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের আল-উদেইদ সামরিক ঘাঁটিতে পাল্টা হামলা চালায়।
এরপর গত ২৪ জুন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন। তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ শেয়ার করা এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ইরান ও ইসরায়েল একটি সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতিতে চূড়ান্তভাবে সম্মতি হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে এই যুদ্ধবিরতি ১২ ঘণ্টা ধরে চলবে, এরপরই যুদ্ধকে সমাপ্ত হিসেবে ঘোষণা করা হবে।
ট্রাম্প আরও জানান, প্রথমে ইরান যুদ্ধবিরতি শুরু করবে, এরপর ১২ ঘণ্টা পর ইসরায়েলও আনুষ্ঠানিকভাবে এতে যোগ দেবে। মোট ২৪ ঘণ্টা পর এই ‘১২ দিনের যুদ্ধ’ বিশ্বব্যাপী সমাপ্ত হিসেবে স্বীকৃতি পাবে।
তিনি লেখেন, যুদ্ধবিরতির সময় দুপক্ষই শান্তিপূর্ণ ও সম্মানজনক আচরণ বজায় রাখবে। আমরা ধরে নিচ্ছি, সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী চলবে—যা অবশ্যই হবে।
এ জন্য আমি ইসরায়েল ও ইরান উভয় দেশকে সাহস, ধৈর্য ও বুদ্ধিমত্তার জন্য অভিনন্দন জানাই।
এই যুদ্ধ আরও দীর্ঘায়িত হয়ে মধ্যপ্রাচ্যকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিতে পারত—এমন আশঙ্কার কথা জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, এই যুদ্ধ বছর বছর ধরে চলতে পারত। কিন্তু তা হয়নি এবং কখনোই হবে না!
আপনার মতামত লিখুন :