নেত্রকোনার মদনে ভাইকে মারধরের দৃশ্য দেখে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে এক বিএনপি নেতা মারা গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (২০ জুন) উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের শ্রীধরপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত রুহুল আমিন তিয়শ্রী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের জমির সীমানা নির্ধারণ করতে গেলে সার্ভেয়ারকে লাঞ্ছিত করে দখলদার পক্ষ। পরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককেও মারধর করে তারা। ভাইকে মারধরের এ ঘটনা দেখতে গিয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রুহুল আমিনের মৃত্যু হয়।
জানা গেছে, রুহুল আমিনের বড় ভাই হাফিজুর রহমান শ্রীধরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। বিদ্যালয়ের জমি ওই পরিবারেরই দানকৃত। প্রধান শিক্ষকের বাবা শামছুল হক জমিটি দান করেন।
বিদ্যালয়ের পাশের জমির মালিক স্থানীয় গোলাপ মিয়ার স্ত্রী আম্বিয়া আক্তার। তিনি বিদ্যালয়ের জমি দখল করে ঘর নির্মাণ করেছেন। এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)-সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেন এবং জমির সীমানা নির্ধারণের আবেদন করেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার সার্ভেয়ার নাসির উদ্দিন জমি মাপতে গেলে আম্বিয়া আক্তার ও তার লোকজন তাকে লাঞ্ছিত করেন। একপর্যায়ে প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমানকেও মারধর করা হয়।
এ দৃশ্য দেখে পাশে থাকা ছোট ভাই ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রুহুল আমিন অসুস্থ হয়ে পড়েন। দ্রুত তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে নেওয়ার পর রাত ১টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমান বলেন, ‘সবার সামনে আম্বিয়াসহ কয়েকজন আমাকে মারধর করে। এ ঘটনা আমার ছোট ভাই রুহুল আমিন দেখতে পেয়ে তাৎক্ষণিক অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’
এ ঘটনায় সার্ভেয়ার নাসির উদ্দিন থানায় মামলা করেছেন। শুক্রবার রাতে শ্রীধরপুর গ্রামের গোলাপ, আম্বিয়া, ফুলেছা ও বাবুসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
মদন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দেবাংশু বলেন, ‘সার্ভেয়ারকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় আটজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এদের মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে। গ্রেপ্তার চারজনকে শনিবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
আপনার মতামত লিখুন :