রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার একটি ইউনিয়নে ঝুঁকিপূর্ণ নারী উন্নয়ন কর্মসূচির (ভিজিডি) কার্ড বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির নেতারা দাবি করেছেন, বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা নিজেদের মধ্যে কার্ড ভাগাভাগি করে নিয়েছেন।
পুঠিয়া উপজেলার বেলপুকুর ইউনিয়নে বরাদ্দ পাওয়া ৪০০টি ভিজিডি কার্ডের বিপরীতে আবেদন করেছিলেন ১,৬৫৭ জন। এনসিপির অভিযোগ অনুযায়ী, এর মধ্যে বিএনপি মনোনীত ব্যক্তিরা পেয়েছেন ২২৫টি কার্ড এবং জামায়াতপন্থি ব্যক্তিরা পেয়েছেন ৯০টি।
বুধবার (২ জুলাই) এনসিপির রাজশাহী জেলা সমন্বয় কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী শামীমা সুলতানাসহ দলের কয়েকজন নেতাকর্মী পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে গিয়ে অনিয়মের অভিযোগ তোলেন। তারা বলেন, বিএনপি ও জামায়াতের নেতারা চেয়ারম্যানকে চাপ প্রয়োগ করে স্বাক্ষর নিচ্ছেন এবং অভিযোগ রয়েছে টাকার বিনিময়ে কার্ড বিতরণ করা হচ্ছে। তারা আরও বলেন, ‘যার গাড়ি-বাড়ি আছে, তারা যেন কার্ড না পায় এটা আমরা চাই। প্রকৃত দুস্থ ব্যক্তিরাই যেন কার্ড পান, সেটাই আমাদের দাবি।’
শামীমা সুলতানা আরও বলেন, ‘যদি এই অনিয়ম চলে, তাহলে সাধারণ মানুষ বঞ্চিত হবে। জুলাই অভ্যুত্থানের কোনো সুফল আমরা পাব না, বরং স্বৈরাচারী ব্যবস্থাই বহাল থাকবে। এ জন্যই আমরা ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’
এ বিষয়ে বেলপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান বলেন, ‘ভিজিডি কার্ড বিতরণের জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডের সদস্যদের যাচাই-বাছাই করে তালিকা ইউনিয়ন কমিটিতে জমা দেওয়ার কথা। এরপর সেই তালিকা উপজেলা কমিটিতে অনুমোদনের জন্য পাঠানোর নিয়ম। কিন্তু বিএনপি ও জামায়াতের নেতারা কয়েকদিন ধরে ইউনিয়ন অফিসে তালিকা দিয়ে যাচ্ছিলেন, ফলে নিরপেক্ষ তালিকা তৈরি করা কঠিন হয়ে পড়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি ইউএনওকে বলেছিলাম লটারি করে তালিকা চূড়ান্ত করার জন্য। তবে ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও সাবেক বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম ইউএনওর কাছে গিয়ে সমঝোতার মাধ্যমে তালিকা তৈরির অনুমতি নিয়ে আসেন। এরপরও আমি আবার ইউএনওকে অনুরোধ করেছি যেন লটারির মাধ্যমেই চূড়ান্ত তালিকা তৈরি হয়। কোনো অনিয়মের সুযোগ রাখা হবে না।’
এ ব্যাপারে পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ, কে, এম নূর হোসেন নির্ঝর রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘বেলপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে এখনো ভিজিএফ কার্ড বিতরণের কোনো তালিকা আসেনি এবং কোনো কার্ড বিতরণ করা হয়নি। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে তালিকা আসলে সেই মোতাবেক যাচাই-বাছাই করেই কেবল সেই কার্ড বিতরণের ব্যবস্থা করা হবে। এতে কারো অভিযোগ থাকলে লটারির মাধ্যমে তা বিতরণের ব্যবস্থা করা হবে। কোনো ধরনের পক্ষপাতিত্ব করা হবে না বলে জানান তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :