শিক্ষক মাহেরীন চৌধুরী—এখন সাহসিকতা ও আত্মত্যাগের এক উজ্জ্বল নাম। নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার বগুলাগাড়ি গ্রামের এই নারী নিজের জীবন উৎসর্গ করে বাঁচিয়েছেন প্রায় ২০ শিক্ষার্থীর জীবন।
সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আগুন ছড়িয়ে পড়লে স্কুলের শিক্ষার্থীদের ঝুঁকির মুখে দেখে সাহসিকতার সঙ্গে তাদের ক্লাসরুম থেকে সরিয়ে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যান মাহেরীন চৌধুরী (৪৬)। তবে নিজে আর বের হতে পারেননি। আগুনে দগ্ধ হন মারাত্মকভাবে।
তাকে দ্রুত উদ্ধার করে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় মারা যান।
শুধু একজন সাহসী শিক্ষক হিসেবেই নয়, মাহেরীন চৌধুরীর পারিবারিক পরিচয়ও অনন্য। তিনি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাতিজি। তার পিতা মহিতুর রহমান চৌধুরী এবং মাতা সাবেরা চৌধুরী। মাহেরীনের দাদি রওশানারা চৌধুরী ছিলেন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের খালা।
মাহেরীন ছিলেন স্থানীয় বগুলাগাড়ি স্কুল অ্যান্ড কলেজের নির্বাহী কমিটির সভাপতি। শিক্ষা, সমাজসেবা ও মানবিক কর্মকাণ্ডে তার সুনাম ছিল প্রশংসনীয়।
মাহেরীন চৌধুরীর মরদেহ মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় তার নিজ এলাকা জলঢাকার বগুলাগাড়ি স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে সমাহিত করা হবে।
বর্তমানে তার মরদেহের অপেক্ষায় শোকাবহ পরিবেশে দিন পার করছেন পরিবারের সদস্য, সহকর্মী ও শিক্ষার্থীরা।
একজন সত্যিকারের ‘নায়িকা’ হিসেবে মৃত্যুর আগে যে নজির তিনি স্থাপন করেছেন, তা দেশবাসী গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করবে বহুদিন। সাহসিকতার এই অধ্যায় বাংলাদেশের শিক্ষা ও মানবতার ইতিহাসে অনন্য হয়ে থাকবে।
আপনার মতামত লিখুন :