নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলায় আসন্ন ঈদুল আজহাকে ঘিরে আলোচনায় এসেছে একটি কোরবানির ষাঁড়। যার নাম রাখা হয়েছে ‘যুবরাজ’। লাল-কালো মিশ্র রঙের ৩০ মণ ওজনের ফ্রিজিয়ান ও শাহিওয়াল জাতের সংকর এই ষাঁড়টি দেখতে যেন বিশাল পাহাড়। এই গরুটিকে ভালোবেসে সন্তানের মতো লালন-পালন করেছেন জয়নাল।
এ কারণে মালিক আদর করে নাম রেখেছেন ‘যুবরাজ’। কোরবানির জন্য প্রস্তুত এ গরুটির দাম হাঁকা হচ্ছে ১০ লাখ টাকা।
ওই উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের জয়নাল আবেদীনের খামারে বেড়ে উঠেছে এই কোরবানির ষাঁড়। নাম দেওয়া হয়েছে ‘যুবরাজ’। ফ্রিজিয়ান ও শাহিওয়াল জাতের সংকর এই গরুটিকে ভালোবেসে সন্তানের মতো লালন-পালন করেছেন তিনি। দীর্ঘ তিন বছরের পরিশ্রম আর মমতার ফল হিসেবে ‘যুবরাজ’ এবার কোরবানির হাট কাঁপাবে বলে প্রত্যাশা করছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, চাটখিল পৌর বাজার থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত মির্জাপুর গ্রামে অবস্থিত জয়নালের খামার। গরুটির শরীরজুড়ে লাল-কালো মিশ্র রং, সুঠাম গড়ন, শান্ত স্বভাব। গরুটির উচ্চতা ৬ ফুট, দৈর্ঘ্য ৭ ফুট এবং আনুমানিক ওজন প্রায় ৩০ মণ বলে দাবি করেন জয়নাল আবেদীন। দাম হাঁকা হয়েছে ১০ লাখ টাকা। এই বিশালদেহী গরুটিকে এক নজর দেখতে সকাল-বিকেল ভিড় করছে দূর-দূরান্তের মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দা শামসুল ইসলাম রতন বলেন, ‘জয়নাল ভাইয়ের গরুটি যেমন বড়, তেমনি স্বাস্থ্যবান ও সুন্দর। এমন গরু আমাদের মতো গ্রাম এলাকায় সচরাচর দেখা যায় না। এবারের কোরবানির হাটে ‘যুবরাজ’ দারুণ সাড়া ফেলবে।’
জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘এই গরুটাকে আমি নিজের সন্তানের মতো করে বড় করেছি। তিন বছর ধরে প্রতিদিন নিয়ম করে খাওয়ানো, গোসল করানো, পরিচর্যা করেছি। কখনো কৃত্রিম কিছু খাওয়াইনি। খৈল, ভূষি, চালের ক্ষুদ, ভুট্টা আর নেপিয়ার ঘাসেই ওকে বড় করেছি। আমার বিশ্বাস, চাটখিল তো বটেই, পুরো নোয়াখালী জেলায় এটাই হবে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ষাঁড়।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিশালদেহী যুবরাজকে আসন্ন কোরবানির ঈদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। রোগ বালাইয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধপত্র ব্যবহার করা হয়েছে। তাছাড়া সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে গরুটিকে প্রস্তুত করা হয়েছে। দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে যে কেউ গরুটি ক্রয় করতে পারবেন। ক্রয় করার পর দেশের যেকোনো প্রান্তে গরুটি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা আমার তরফ থেকে করা হবে। স্থানীয় হাটে ভালো দাম না পেলে যুবরাজকে চট্টগ্রামের বড় কোরবানির হাটে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতিও রয়েছে।’
চাটখিল উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘বিশালদেহী চাটখিলের যুবরাজ নামের গরুটিকে জয়নাল আবেদীন প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে প্রস্তুত করেছেন। চাটখিলের পশুপ্রেমী ও কোরবানিদাতাদের মধ্যে গরুটি নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ দেখা গেছে। কোরবানির ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে, ততই ‘যুবরাজ’-এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। এখন দেখার বিষয়, এই তিন বছরের সাধনার ফল কতটুকু মেটাতে পারে চাটখিলের এই গরুপ্রেমী খামারির আশা।’
আপনার মতামত লিখুন :