পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার খারিজা বেতাগী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ধানের বীজতলা তৈরি করেছেন প্রধান শিক্ষকের ভাতিজা, এমন অভিযোগে ক্ষোভে ফুঁসছে স্থানীয় ছাত্র, অভিভাবক ও যুবসমাজ। মাঠজুড়ে বেড়া দিয়ে তৈরি করা এই বীজতলায় বন্ধ হয়ে গেছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা।
বুধবার (২৩ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দশমিনা উপজেলার বেতাগী সানকিপুর ইউনিয়নের ৫৫নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে প্রধান শিক্ষকের ভাতিজা মো. ফিরোজ মৃধা আমন ধানের বীজতলা তৈরি করেছেন। এতে বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের খেলাধুলা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্র জানায়, ‘আমাদের স্কুলের একটাই মাঠ, এখানে আমরা হাফটাইমে খেলি। কিন্তু এখন ধানের বীজতলা বানানোয় খেলা বন্ধ। আমরা আগের মতো মাঠ চাই।’
 
এক অভিভাবক বলেন, ‘স্কুলের জায়গা নিয়ে কিছু বললেই ঝামেলা হয়। আমরা জমিদাতা, কিন্তু প্রধান শিক্ষকের ভয়ে কিছু বলতে পারি না। উনি আওয়ামী লীগের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি, তার প্রভাবেই এসব করছে।’
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক নূর হোসেন মৃধা শেখ হাসিনার আমলে বিদ্যালয়ের নানা সম্পদ নিজের দখলে নিয়েছিলেন। তিনি এখনো আওয়ামী লীগের পদ ব্যবহার করে বিদ্যালয়ের ক্ষমতায় থেকে তার ভাতিজা ফিরোজ মৃধাকে দিয়ে বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে আমন ধানের চাষ করাচ্ছেন।
এ বিষয়ে ফিরোজ মৃধা বলেন, ‘বিদ্যালয়ের মাঠে ধানের বীজতলা বানানো ঠিক হয়নি, এজন্য আমি ক্ষমা চাই। বুঝতে পারিনি বিষয়টি এতটা সমস্যা করবে।’
বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষক জানান, ‘বৃষ্টিতে পানিভর্তি হওয়ায় মাঠেই বীজতলা করেছে ফিরোজ মৃধা। তবে এটা ঠিক হয়নি।’
অন্যদিকে প্রধান শিক্ষক নূর হোসেন মৃধা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি শুক্রবার জুমার নামাজ পড়ে এসে দেখি মাঠে বেড়া দিয়ে বীজতলা বানানো হয়েছে। ও বলেছে, তার জমি পানিতে তলিয়ে গেছে বলে বিদ্যালয়ের মাঠে করেছে। আমি জানতাম না।’
 
রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি রাজনীতি করি না, কর্মীরা জোর করে আমাকে পদে রেখেছে। আমি কোনো প্রোগ্রামে যাই না।’
তবে স্থানীয় সূত্র বলছে, আওয়ামী লীগের সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতির পদ পান এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে তাকে অংশ নিতে দেখা গেছে। তার রাজনৈতিক ছবি ও ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে পাওয়া গেছে, যদিও তিনি তা অস্বীকার করছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোসা. মরিয়ম পারভিন বলেন, ‘ঘটনাটি শোনার পর প্রধান শিক্ষককে জানিয়েছি। তিনিও বিষয়টি স্বীকার করেছেন। আমি রবিবার বিদ্যালয়ে গিয়ে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেব। সরকারি চাকরিতে থেকে কেউ রাজনীতি করলে তার চাকরিতে থাকার অধিকার নেই।’
স্থানীয়দের একটাই দাবি—বিদ্যালয়ের মাঠ যেন দখলমুক্ত করা হয় এবং প্রধান শিক্ষককে অপসারণ করা হয়।

 
                             
                                    


 সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                    -20251031233315.webp) 
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                    -20251031164732.webp) 
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন