ইলিশের প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় সরকারের জারি করা ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। এই সময়ে পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার তেতুলি ও বুড়া গৌরাঙ্গ নদীতে নয়টি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে ৫১ জন জেলেকে আটক করেছে প্রশাসন।
অভিযানে প্রায় ১৪ লাখ ৮২ হাজার মিটার নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল, এক টন মা ইলিশ মাছ ও ৩১টি মাছ ধরার নৌকা জব্দ করা হয়।
নিষেধাজ্ঞার সময়ে জেলেদের জীবনে নেমে আসে চরম দুর্ভোগ। নদীতে নামতে না পারায় অনেকের ঘরে দেখা দেয় অভাব-অনটন। কেউ ধারকর্জ করে সংসার চালিয়েছেন, কেউবা নৌকা মেরামত বা জাল তৈরি করে সময় পার করেছেন। তবুও ভবিষ্যতের মঙ্গলের আশায় অনেক জেলে সরকারের সিদ্ধান্তে সহযোগিতা করেছেন।
তেতুলি এলাকার জেলে মো. আল আমিন বলেন, “২২ দিন নদীতে নামতে পারি নাই, ঘরে খাবার ছিল না। তবুও মা ইলিশ বাঁচলে আমরাও বাঁচব এই আশায় কষ্টটা সহ্য করেছি।”
দশমিনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইরতিজা হাসান বলেন, “ইলিশ রক্ষায় প্রশাসন কঠোর ভূমিকা পালন করেছে। জেলেদের কষ্ট আমরা বুঝি, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ইলিশ সংরক্ষণ জরুরি। নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেও অবৈধভাবে মাছ শিকার বন্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন জানান, আটক জেলেদের অনেকেই ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছেন। জব্দ করা ইলিশ স্থানীয় এতিমখানা ও সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠানে বিতরণ করা হয়েছে।
সরকার ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী, ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত সারাদেশে ইলিশ ধরা, বিক্রি, পরিবহন ও মজুত নিষিদ্ধ ছিল। নিষেধাজ্ঞা শেষে এখন জেলেরা আবার নদীতে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।


